সৌরভ মাজি, বর্ধমান: স্কুলছাত্রীর সঙ্গে অশ্লীল ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, টাকা দাবি করা, ফোনে নানাভাবে উত্যক্ত করার অভিযোগ পড়শি যুবকের বিরুদ্ধে। সেই জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল ছাত্রী! শুক্রবার তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। আর তার মৃত্যুতে প্রতিবেশী যুবককেই কাঠগড়ায় তুলল পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার আঝাপুর এলাকায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এদিন সকালে বাড়িতে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর। জামালপুর থানার পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে জামালপুর ব্লক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, গ্রামের এক যুবক ভিনরাজ্যে গয়নার কারিগরের কাজ করেন। ফোনে সে বছর তেরোর মেয়েটিকে নানাভাবে উত্যক্ত করছিল বেশ কিছুদিন ধরে। গ্রামে থাকার সময় ছবি তুলেছিল। সেই ছবি এডিট করে নিজের ছবির সঙ্গে খারাপ ছবি বানিয়ে নাবালিকাকে পাঠিয়ে 'ব্ল্যাকমেল' করছিল। তার দাবি না মানলে ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে বলে হুমকিও দিয়েছিল। কয়েকটি ছবিও সামাজিক মাধ্যমে দিয়েছে। তাতেও কাজ না হওয়ায় আরও খারাপ ছবি ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে টাকা নিয়ে চাপ দিচ্ছিল বলে অভিযোগ।
পরিবারের লোকজনের আরও অভিযোগ, এই নিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিল ওই নাবালিকা। সেই কারণেই সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। এদিকে, ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের পর থেকেই বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে ওই যুবকের পরিবারের লোকজন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বর্ধমান সদর দক্ষিণের এসডিপিও অভিষেক মণ্ডল জানান, ওই নাবালিকার বাড়ির লোকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে ছেলেটি ভিন রাজ্য থেকে মেয়েটিকে ফোনে উত্যক্ত করেছিল। এসডিপিও-র কথায়, "এখনই তদন্তের স্বার্থে আমরা ছেলেটির নাম পরিচয় প্রকাশ করতে চাইছি না। অভিযুক্তের বাড়িও জামালপুর থানা এলাকায়। তার বাড়ির লোকেরাও পালিয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। কোনও রকম উত্তেজনার পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় তার জন্য এই এলাকাতেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।"