সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কার্গিলের মতোই জম্মু ও কাশ্মীরে বড় কোনও পরিকল্পনা করছে পাকিস্তান। জানা যাচ্ছে, পাকিস্তানের স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপের (SSG) অন্তত ৬০০ কমান্ডো উপত্যকার কূপওয়াড়া-সহ একাধিক জায়গায় আত্মগোপন করে রয়েছে। এদের পরিকল্পনা উপত্যকায় বড়সড় কোনও জঙ্গি হামলা চালানোর। সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডেলে এমনই বার্তা দিয়েছেন আমজাদ আয়ুব মির্জা নামে এক ব্যক্তি। ব্রিটেনের বাসিন্দা এই ব্যক্তি একজন লেখক ও মানবাধিকার কর্মী। তাঁর এহেন দাবিতে স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল শুরু হয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি যে একেবারেই স্বাভাবিক অবস্থায় নেই গত এক মাসে তা বেশ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রশাসনের তরফেই জানা গিয়েছে, অন্তত ৪০ থেকে ৫০ জন পাক জঙ্গি জম্মুর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। দফায় দফায় সেনা বাহিনীর উপর হামলা চালাচ্ছে তারা। এই পরিস্থিতিতে উপত্যকার পরিস্থিতি সামাল দিতে কড়া হাতে মাঠে নেমেছে সেনা। সীমান্ত সিল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বাড়তি ২০০০ সেনা জওয়ানকে পাঠানো হয়েছে উপত্যকায়। এরই মাঝে আয়ুব মির্জার এক্স বার্তায় সতর্ক হয়ে উঠেছে দেশের নিরাপত্তা বিভাগ।
বিস্তারিত রিপোর্ট তুলে ধরে এক্স হ্যান্ডেলে মির্জা দাবি করেছেন, কমপক্ষে ৬০০ কমান্ডো নিয়ে গঠিত এসএসজির একটি ব্যাটালিয়ন ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে। এরা কুপওয়াড়া এবং তার পার্শ্ববর্তী স্থানে লুকিয়ে আছে। কুপওয়াড়া, পীর পাঞ্জাল এবং শামসবাড়ি পর্বতের মাঝখানে অবস্থিত। এই জায়গা জঙ্গি এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জন্য আদর্শ লুকানোর জায়গা। স্থানীয় জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি পাকিস্তানি সেনাকে পূর্ণ সহযোগিতা করছে। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল শহিদ সেলিম জানজুয়া জম্মুতে হামলায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এমনকী এসএসজির জেনারেল অফিসার কমান্ডিং মেজর জেনারেল আদিল রহমানি নিজে নজর রাখছেন গোটা পরিকল্পনায়। পাকিস্তানের মূল লক্ষ্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১৫ কর্পসের মোকাবেলা করা। উপত্যকায় সন্ত্রাস রুখতে সবার আগে উঠে আসে এই ১৫ কর্পসের নাম।
শুধু তাই নয় এক্স হ্যান্ডেলে মির্জার আরও দাবি, এসএসজির এক ব্যাটেলিয়ান ভারতে ঢুকলেও আরও দুটি ব্যাটেলিয়ান বর্তমানে মুজফফরাবাদে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে। উপত্যকায় সন্ত্রাসকে ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছে দিতেই এই ব্যাটেলিয়ান তৈরি করা হয়েছে। এখনও তারা ভারতে ঢুকতে না পারলেও সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে। স্থানীয় জঙ্গিদের সহায়তায় এই দুই ব্যাটেলিয়ন কাশ্মীরে প্রবেশ করতে সফল হলে পীর পাঞ্জালের পাহাড়ে কার্গিলের মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা।
[আরও পড়ুন: ৩ পড়ুয়ার মৃত্যুতে ‘বুলডোজার অ্যাকশন’ দিল্লিতে, গুঁড়িয়ে দেওয়া হল অবৈধ নির্মাণ]
উল্লেখ্য, কার্গিল যুদ্ধের সময়, প্রায় ৫ হাজার পাকিস্তানি সেনা ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিল। যার ফলে ৬২ দিনের লড়াই শেষে ভারত কার্গিল যুদ্ধে জয়লাভ করে। এবারও তেমনই ছক কষা হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। যদিও কাশ্মীর পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই ভারতীয় সেনার তরফে শুরু হয়ে গিয়েছে অপারেশন সার্প বিনাশ ২.০। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সরাসরি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই অভিযানে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং সেনাপ্রধানকে ক্রমাগত রিপোর্ট করছে ভারতীয় সেনা ও গোয়েন্দা বিভাগ।