অর্ণব আইচ: মানিক ভট্টাচার্য ও তাঁর পরিবারের অস্থাবর সম্পত্তি ইতিমধ্যে বাজেয়াপ্ত হয়েছে। মানিক ও তাঁর ছেলের বেশ কিছু স্থাবর সম্পত্তিরও হদিশ পেল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ইডির সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য ও তাঁর পরিবারের ৭ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ওই সম্পত্তি অস্থাবর। অর্থাৎ ৬১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার সঙ্গে শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও ফিক্সড ডিপোজিট হিসাবে রেখে দেওয়া অস্থাবর সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ইডি জানিয়েছে, বেশ কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান মিলেছে, যেগুলি মানিক তাঁর বন্ধু ও আত্মীয়দের নামে রেখেছিলেন। অনেকগুলি জয়েন্ট অ্যাকাউন্টেও টাকা রাখা হয়। এর মধ্যে একটি অ্যাকাউন্ট মানিকের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য ও আত্মীয় মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের। অথচ মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যু হয়েছে ২০১৬ সালে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছিল ৪৯ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নগদ, ৫ লক্ষ ৮ হাজার টাকার সোনা ও ৪৮ কোটি ২২ হাজার টাকার সম্পত্তি। এখনও পর্যন্ত নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি বাজেয়াপ্ত করেছে ১১১ কোটি টাকার সম্পত্তি।
[আরও পড়ুন: ‘মাধ্যমিকের আগে মোবাইল ব্যবহার করব না’, পড়ুয়াদের অঙ্গীকারপত্রে সই করাচ্ছে স্কুল]
ইডির অভিযোগ, ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড, ফিক্সড ডিপোজিটের মাধ্যমে টেট দুর্নীতির টাকা সরানো হয়েছে। এ ছাড়াও যে স্থাবর সম্পত্তি মানিক ভট্টাচার্য ও তাঁর ছেলে শৌভিকের নামে রয়েছে, সেগুলি নিয়োগ দুর্নীতির টাকায়ই কেনা হয়েছে কি না, সেই ব্যাপারে এখনও তদন্ত চালাচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা। তবে ওই স্থাবর সম্পত্তির অনেকগুলিই অনেক আগে কেনা বলেও ইডির কাছে খবর। ইডির তালিকা অনুযায়ী, মানিক ও তাঁর ছেলে দু’টি আমবাগানের মালিক। নদিয়ার কালীগঞ্জ থানা এলাকার মঘড়াইক্ষেত্র গ্রামে মানিকের পরিবারের দশ একর জমি আছে। পরিবার সূত্রে পাওয়া ওই জমির একটি অংশের মালিক হচ্ছেন মানিক নিজে। ২০১৪ সালে মানিক তাঁর ছেলের নামে ওই কালীগঞ্জেই ২০ কাঠা বা এক বিঘা আমবাগান কেনেন মাত্র দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে। আবার ওই একই গ্রামে মানিক ভট্টাচার্যর ছেলে শৌভিক কেনেন ৩৬ ছটাক আমবাগান। তার দাম ছিল ১ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা।
যাদবপুরে মানিক ভট্টাচার্যের একটি ৬৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট রয়েছে। তার জন্য মানিক বিমা সংস্থা থেকে ঋণও নিয়েছিলেন। এর পর ২০১০ সালে মানিক যাদবপুরের সেন্ট্রাল রোডে একটি দেড় হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট কেনেন। ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে কেনা ওই ফ্ল্যাটের জন্য একটি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণও নেন মানিক। এ ছাড়াও ফ্ল্যাটের তলায় একটি গ্যারাজের জায়গা কেনেন মানিক ভট্টাচার্য। এই সম্পত্তিগুলির কেনার জন্য টাকার উৎসের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে ইডি।