সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন আর এক দশরথ মানঝির গল্প। ঝাড়খণ্ডের সেই ব্যক্তি পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করেছিলেন। আর ইনি পাহাড়ই কাটলেন। কিন্তু রাস্তা তৈরির জন্য নয়। গ্রামের জলকষ্ট মেটাতে।
মাস কয়েক আগে খবরে এসেছিলেন ওড়িশারই জলন্ধর নামে এক ব্যক্তি। তাঁর গল্প ছিল অনেকটা মানঝির মতোই। পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করেছিলেন তিনিও। তিনি নিরক্ষর। কিন্তু ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা শেখাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দুর্গম পাহাড় টপকে নিত্য স্কুলে যাতায়াত করা সম্ভব নয়। তাই একাহাতেই পাথর কেটে তৈরি করেছিলেন রাস্তা। এবার আরও এক ‘মাউন্টেন ম্যান’-এর সাক্ষাৎ পেল ওড়িশার মানুষ। তিনি দ্বৈতারিক নায়ক। থাকেন ওড়িশার কেওনঝাড় জেলার বৈতরণী গ্রামে। বয়স তাঁর ৭০। কিন্তু বুড়ো হাড়েই ভেলকি দেখালেন তিনি। অসাধ্য সাধন করলেন।
[ বয়স ছুঁয়েছে সত্তর, জলকষ্ট মেটাতে তবু একা হাতেই কুয়ো খুঁড়ছেন সীতারাম ]
জলের সমস্যা বৈতরণী গ্রামে বহুদিনের। গরম পড়লে তো কথাই নেই। শুধু বৈতরণী গ্রাম নয়। বাঁসপাল, তেলকই ও হরিচন্দ্রপুর গ্রামের অবস্থাও তথৈবচ। সভ্যতা প্রসারের প্রতিযোগিতায় কাটা পড়ছে গাছ। ফলে কমে যাচ্ছে বৃষ্টি। তারই অভিশাপ এসে পড়েছে এই গ্রামগুলোর উপর। জলের অভাব এখানে প্রতি বছরের সমস্যা। পানীয় জল তো বটেই, মেলে না সেচের জলও। ফলে চাষবাসও শান্তিতে করতে পারে না এলাকার মানুষ। সেই সমস্যা দূর করার সংকল্প নিয়েছিলেন সত্তরোর্ধ্ব দ্বৈতারিক নায়েক। নিজের গ্রামে জল নিয়ে আসার জন্য তিনি পাথর ভেঙে খাল কেটেছেন।
[ সন্তানরা স্কুলে যাবে, একা হাতে রাস্তা গড়ে নজির ‘পাহাড়ি মানুষ’-এর ]
নায়ক জানিয়েছেন, “এখানে সেচের কোনও সুবিধা নেই। আমরা কখনও আমাদের জমিতে ঠিকমতো চাষ করতে পারি না। তাই আমি ও আমার পরিবারের লোকজন তিন বছর ধরে পাথর ভাঙার কাজ করেছি। পাথর আর ঝোপ জঙ্গল পরিষ্কার করেছি যাতে আমাদের গ্রাম পর্যন্ত জল আসতে পারে। গতমাসে আমাদের চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়েছে।”
অভিযোগ, এখানে জেলা প্রশাসন উপজাতিদের কোনওরকম সাহায্য করে না। তাই মানুষ নিজেই দরকারি কাজ করে নেয়। কেওনঝাড়ের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শুধাকর বেহেরা জানিয়েছেন, রিপোর্ট অনুযায়ী করাটাকাটা নালা থেকে খাল কেটেছেন নায়ক। প্রশাসনের তরফ থেকে তাঁদের গ্রামে যাওয়া হয়েছিল বলেও জানান তিনি।
The post পাথর ভেঙে এল জল, বুড়ো হাড়েই ভেলকি আরও এক ‘মাউন্টেন ম্যান’-এর appeared first on Sangbad Pratidin.