সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজস্থানের (Rajasthan) কোটা শহরের জে কে লোন হাসপাতালে আবারও শিশুমৃত্যুর মিছিল। মাত্র কয়েক ঘণ্টা। তার মধ্যেই মারা গেল ৯টি সদ্যোজাত শিশু (Newborn)। মৃত শিশুগুলির বয়স এক থেকে চার দিনের মধ্যে। গত বছরও এই সরকারি হাসপাতালে পরপর শিশুমৃত্যুর ঘটনায় দেশজুড়ে ছড়িয়েছিল উদ্বেগ। এবার আবারও সেই একই হাসপাতালে সদ্যোজাতদের এমন করুণ মর্মান্তিক পরিণতি যেন বুঝিয়ে দিচ্ছে, গতবারের সেই ঘটনার পরও স্বাস্থ্য পরিষেবার কোনও উন্নতিই হয়নি এই হাসপাতালে।
গত বুধবার এই হাসপাতালে মারা যায় ৫টি শিশু। বৃহস্পতিবার মারা গিয়েছে আরও ৪টি। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রঘু শর্মা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে মৃত শিশুগুলির পরিবার। বৃহস্পতিবার থেকে ধরনায় বসেছেন দুই মৃত শিশুর আত্মীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতালে শিশুগুলিকে নিয়ে আসার পরে তাদের পরীক্ষা করতে কেউ এগিয়ে আসেনি। হাসপাতালের কর্মীদের অনুরোধ করলে তাঁরা জানান, সকালে চিকিৎসকরা এলে তাঁরা শিশুগুলিকে পরীক্ষা করবেন। দেখতে দেখতে অচিরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিশুগুলি।
[আরও পড়ুন: অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ, ঝাড়খণ্ডে বিধবা মহিলাকে নগ্ন করে মারধর গ্রামবাসীদের]
যদিও হাসপাতালের সুপারিটেন্ডেন্ট সুরেশ দুলারার দাবি, কোনও ধরনের সংক্রমণ কিংবা অস্বাভাবিক কারণে এতগুলি শিশুর মৃত্যু হয়নি। তাঁর মতে, সব ক’টি মৃত্যুই স্বাভাবিক মৃত্যু। একই সুর কোটা মেডিক্যাল হাসপাতালের অধ্যক্ষেরও। তিনি বলছেন, তিনটি শিশুকে নাকি মৃত অবস্থাতেই আনা হয়েছিল। জন্মগত ত্রুটির কারণে মারা গিয়েছে আরও তিনজন। আর বাকি শিশুদের ক্ষেত্রে মৃত্যু হয়েছে অকস্মাৎ। সদ্যোজাতদের ক্ষেত্রে যে ধরনের মৃত্যু অনেক সময়ই দেখা যায়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এহেন ব্যাখ্যার পরও জেলা প্রশাসন যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। জেলা কমিশনার কেসি মীনা ও জেলার কালেক্টর উজ্জ্বল রাঠোর গতকাল সন্ধেবেলায় হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। পরে তাঁরা একটি বৈঠকও করেন বিষয়টি নিয়ে। ইতিমধ্যেই ছ’জন অতিরিক্ত চিকিৎসক ও দশজন নার্সকে এই পরিস্থিতির দিকে বিশেষ নজর রাখার ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য, মৃত্যুর ঘটনা যেন আর না বাড়ে। তাছাড়া শুক্রবারের মধ্যে নতুন তৈরি শিশু বিভাগটিও শুরু করতে বলা হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে এই হাসপাতালে শতাধিক সদোজাতের মৃত্যু হয়েছিল। যা দেশজুড়ে উদ্গেগের সৃষ্টি করেছিল। গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।