মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: উপ সংশোধনাগারে বিচারাধীন বিজেপি কর্মীর (BJP Worker) মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল উলুবেড়িয়ায়। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটে উলুবেড়িয়া উপ সংশোধনাগারে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত বিচারাধীন বন্দির নাম শ্রীকান্ত রায়। বছর ঊনচল্লিশের ওই বন্দি বাউড়িয়া থানার পশ্চিম বুড়িখালি এলাকার বাসিন্দা।
পয়গম্বর বিতর্কে দিনকয়েক আগে অশান্ত হয়ে ওঠে হাওড়ার বিভিন্ন এলাকা। পথ অবরোধ-সহ নানা গোলমালকে কেন্দ্র করে ছড়ায় উত্তেজনা। তাতে যোগসাজশ থাকার অভিযোগে গত ১১ জুন বাউড়িয়া থানার পুলিশ শ্রীকান্ত রায়কে গ্রেপ্তার করে। আদালতের নির্দেশে শ্রীকান্তর জেল হেফাজত হয়। উলুবেড়িয়া উপ সংশোধনাগারে ছিল সে। মঙ্গলবার সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সকাল ৬টা ৪০ মিনিট নাগাদ উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এরপর প্রায় এগারোটা নাগাদ তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। বন্দির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে চাপানউতোর।
[আরও পড়ুন: বুলডোজার দিয়ে তৃণমূল নেতাদের বাড়ি ভাঙার হুমকি, বিতর্কে দিলীপ ঘোষ]
নিহতের পরিবারের দাবি, বন্দি অবস্থায় পুলিশের অত্যাচারেই প্রাণ গিয়েছে শ্রীকান্তর। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিও জানান নিহতের পরিজনেরা। কম্যান্ডো হাসপাতালে ময়নাতদন্তের দাবিও জানিয়েছেন নিহতের স্ত্রী। শ্রীকান্তর স্ত্রী অনিমা দাসের দাবি, তাঁর স্বামী নির্দোষ। শ্রীকান্ত বাজারে গিয়েছিল। সেই সময় পুলিশ তাকে বাউড়িয়া থানায় তুলে নিয়ে যায়। বেধড়ক মারধরও করে পুলিশ। এমনকি গাড়ি থেকে নামানোর সময় তাকে পুলিশ ব্যাপক মারধর করে বলেই দাবি বন্দির স্ত্রীর। গত ১৩ জুন শ্রীকান্তর সঙ্গে তাঁর স্ত্রী দেখাও করেন। সেখানে শ্রীকান্ত তাঁকে মারধরের কথা জানান বলেই দাবি। ঠিক তার পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার পুলিশ অনিমাদের জানায় শ্রীকান্ত গুরুতর অসুস্থ। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভরতি থাকার কথা শুনে দৌড়ে যান। তাঁরা হাসপাতালে গিয়ে দেখেন, স্বামীর দেহ মেঝেতে পড়ে রয়েছে। তার শরীরের একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
হাওড়া গ্রামীণ এলাকার পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া জানান, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে অসুস্থতার কারণেই প্রাণ গিয়েছে শ্রীকান্তর। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত শ্রীকান্তর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব নয়। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার অপেক্ষায় তদন্তকারীরা।