সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বন্দুক উঁচিয়ে শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। হাজি লুকমান নামে ওই ব্যক্তিকে নিজেকে রাজনৈতিক দলের কর্মী বলে দাবি করে। তবে সে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত তা এখনও জানা যায়নি। ধৃতের কাছ থেকে বন্দুক উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার লাইসেন্স রয়েছে বলেই দাবি তদন্তকারীদের।
হাজারও প্রতিবাদী বসে রয়েছেন দিল্লির শাহিনবাগের রাস্তায়। তারই মাঝে আচমকা মঙ্গলবার দুপুর তিনটে নাগাদ বন্দুক হাতে ঢুকে পড়েন এক ব্যক্তি। প্রতিবাদীদের দাবি, নিজেকে রাজনৈতিক দলের কর্মী বলে পরিচয় দেয় সে। তবে কোন দল তা স্পষ্ট করে বলেনি ওই ব্যক্তি। বন্দুক উঁচিয়ে হুমকি দিতে থাকে সে। ওই ব্যক্তি বলতে থাকে ‘রাস্তা ফাঁকা করো নইলে লোক মরবে’। তার সঙ্গে ছিল আরও একজন। তবে ওই ব্যক্তির হাতে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল না। ধৃত হাজি লুকমান নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘প্রশান্ত কিশোর করোনা ভাইরাস’, বিতর্কিত মন্তব্য জেডিইউ নেতার]
তবে শাহিনবাগের বিক্ষোভকারীরা তাদের রুখে দাঁড়ায়। ওই যুবকের হাত থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তাকে বেধড়ক মারধর করে বলেও অভিযোগ। আত্মরক্ষারও চেষ্টা করে যুবক। দু’পক্ষের ধস্তাধস্তিতে ক্রমশই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গোটা ঘটনাটির ভিডিও করেন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। তা ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। শাহিনবাগের তরফে একটি টুইটে গোটা ঘটনাটি জানানো হয়। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘‘সশস্ত্র সমাজবিরোধীরা ঢুকে পড়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি, দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠীর লোকেরা আরও আসবে এবং হামলা করবে। সবাইকে আমাদের আবেদন প্রতিবাদে যোগ দিন সংখ্যা বাড়ান। হিংসা প্রতিরোধ করুন।’’ এ ঘটনা নজর এড়ায়নি পুলিশের। হাজি লুকমান নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে বন্দুকটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, বন্দুকটির লাইসেন্স ছিল। কেন সে ওই এলাকায় গিয়ে শাহিনবাগের প্রতিবাদীদের খুনের হুমকি দিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পর থেকেই রাজধানীর বুকে অরাজনৈতিক এবং অহিংস আন্দোলন চলছে। শাহিনবাগের এই আন্দোলনের মুখ মূলত মহিলারা। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এই বিক্ষোভই এখন টার্গেট বিজেপির। ইতিমধ্যেই গেরুয়া শিবিরের দুই নেতা শাহিনবাগের বিক্ষোভকারীদের গুলি করার হুমকি দিয়েছেন। খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এই বিক্ষোভের সমর্থনকারীদের দেশদ্রোহী বলে কটাক্ষ করেছেন। তবে, এসব ছাপিয়ে গেলেন পশ্চিম দিল্লি লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ প্রবেশ কুমার সং বর্মা। তিনি সরাসরি বিক্ষোভকারীদের ধর্ষক ও খুনি বলে দিলেন। দিল্লিতে বিজেপি ক্ষমতায় এলে শাহিনবাগের বিক্ষোভকারীদের এক ঘণ্টার মধ্যে হটিয়ে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন তিনি। বাংলার বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষও শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের আক্রমণ করতে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন। তবে এত কুকথার পরেও আন্দোলনের পথ থেকে পিছু হঠতে নারাজ আন্দোলনকারীরা।
The post ‘রাস্তা ফাঁকা করো নইলে লোক মরবে’, শাহিনবাগে বন্দুক হাতে হুমকি দিয়ে ধৃত যুবক appeared first on Sangbad Pratidin.