অর্ণব আইচ: সিম কার্ড ক্লোন করে পোস্তার ব্যবসায়ীকে সাড়ে ৭২ লক্ষ টাকার জালিয়াতি। তদন্ত শুরু করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। কীভাবে জালিয়াতরা সিম কার্ড ক্লোন করেছে, তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ব্যাপারে নবরত্ন ঝাওয়ার নামে পোস্তা এলাকার এক সর্ষের তেলের ব্যবসায়ী এই অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ অনুযায়ী, তাঁর কাছ থেকে এক সর্ষে বিক্রেতা ২২ লক্ষ টাকা পেতেন। তিনি একটি চেক লিখে তাঁকে দেন। সেই চেকটি বাউন্স করে। একটি বেসরকারি ব্যাংকের বড়বাজার শাখায় যথেষ্ট টাকা থাকা সত্ত্বেও চেক বাউন্স করায় তিনি হতবাক হয়ে যান। সেদিনই ব্যাংকে যান। ক্রমে ব্যবসায়ী বুঝতে পারেন, তাঁর অজান্তে প্রথম দিন ৬ বারে ৪৯ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা ও দ্বিতীয় দিন তিন বার লেনদেনে ২২ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। অনলাইন আরটিজিএস-এ ন’টি লেনদেনের মাধ্যমেই তোলা হয়েছে পুরো ৭২ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা। ব্যাংকের তথ্যের ভিত্তিতে অভিযোগ জানাতে তিনি প্রথমে জোড়াবাগান থানায় যান। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় মধ্য কলকাতার পোস্তা থানায়। পোস্তায় হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে লালবাজারের গোয়েন্দারা তদন্ত শুরু করেন। গোয়েন্দারা তদন্ত করে জানতে পারেন যে, একটি বেসরকারি ব্যাংকের কাঁথি ও ডানলপ শাখা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের উত্তরপাড়া শাখায় তিন গ্রাহকের মাধ্যমে তোলা হয়েছে পুরো টাকা।
[আরও পড়ুন: চাকরি গেল আরও ৩ প্রাথমিক শিক্ষকের, এপর্যন্ত হাই কোর্টের ‘কোপে’ মোট ২৫৮ জন]
পুলিশের কাছে ওই ব্যবসায়ী দাবি করেছেন যে, তাঁর মোবাইলে কোনও মেসেজ বা হোয়াটসঅ্যাপও যায়নি। তিনি কোনও লিঙ্কে ক্লিক করেননি। বাড়ি ফিরে এসে তিনি দেখেন, তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সিম কার্ড কোনও কাজ করছে না। তাঁর মোবাইলের সিম সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে যায়। এর ফলে পুলিশের ধারণা, ওই ব্যবসায়ীর সিম কার্ড ক্লোন করেছে ব্যংক জালিয়াতরা। যদিও ক্লোনিংয়ের আগে টাকা লেনদেনের জন্য তারা তিনটি ব্যাংকে ‘মিউল অ্যাকাউন্ট’ তৈরি করে বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নেয়।
অ্যাকাউন্ট ভাড়া নেওয়ার কারণেই ব্যাংকে কেওয়াইসি দেখে মোবাইল নম্বর বা ঠিকানা পেলেও আসল জালিয়াতের হদিশ পাওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ব্যাংক দু’টির সিসিটিভি পরীক্ষা করছেন গোয়েন্দারা। এর আগে কলকাতায় সিম কার্ড ক্লোন করার মতো ঘটনা ঘটলেও তা সংখ্যায় কম। এর জন্য জালিয়াতরা কোনও ‘ক্লোনিং টুল’ ব্যবহার করে থাকে। কী পদ্ধতিতে ওই ব্যবসায়ীর সিম কার্ড ক্লোন করা হয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।