স্টাফ রিপোর্টার: ট্রাম সংরক্ষণ নিয়ে হাই কোর্টের গড়ে দেওয়া কমিটিকে না জানিয়ে কেন ট্রাম লাইন তোলা হল? মঙ্গলবার সেই প্রশ্নই তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। এ নিয়ে রাজ্যের কাছে জবাব তলব করেছে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ। ট্রাম সংরক্ষণ নিয়ে আদালতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত শহর কলকাতায় কোনও জায়গায় ট্রাম লাইন তোলা যাবে না বলেও স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ১৪ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।
এদিনের শুনানিতে আদালতের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, "ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে কিছু জিনিস সংরক্ষণ প্রয়োজন। আর এর জন্য সৎ ইচ্ছার প্রয়োজন।" ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয় বলেও মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। সম্প্রতি, কলকাতার ঐতিহ্য ট্রাম বাঁচাতে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল হাই কোর্টে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে আগেই একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিল আদালত। সেই কমিটিকে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট।
কিন্তু অভিযোগ, গত জানুয়ারির পর আর কোনও বৈঠকই করেনি কমিটি। পাশাপাশি, কমিটিকে অন্ধকারে রেখে শহরের রাস্তা থেকে ট্রাম লাইন তুলে দেওয়া হয়েছে। এবং একাধিক রুটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। এদিন রাজ্যের এজি কিশোর দত্ত জানান, "ট্রাম ফিরিয়ে আনতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন, তা রাজ্যের কাছে নেই।" এই বক্তব্য শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, "অবশ্যই ওই পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করার ক্ষমতা রাজ্যের রয়েছে। ইচ্ছা না থাকলে উপায় হয় না। বিদেশে যেখানে ট্রাম ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। ট্রাকের বদলে এখন রবারের চাকাতেও ট্রাম চলছে। সেখানে কমিটিকে না জানিয়েই রাজ্য তা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছে।" এজি বলেন, "রাস্তার মাঝামাঝি ওই ট্রাম লাইনগুলি থাকার কারণে শহরে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছিল। বিশেষত বাইক-স্কুটি দুর্ঘটনার মুখে পড়ছিল। তাছাড়া হাই কোর্ট ট্রাম লাইন না তুলে ফেলার জন্য যে নির্দেশ জারি করেছিল তা পুনর্বিবেচনার জন্য আগেই আবেদন জানিয়েছে রাজ্য।"
পাশাপাশি এজি আরও বলেন, "ট্রাম পুরোপুরি তুলে দেওয়া হচ্ছে না। রাজ্য ট্রামকে হেরিটেজ হিসাবে রাখতে চাইছে।" তার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, "তেমন হলে রাজ্য পিপিপি মডেলে ট্রাম ফিরিয়ে আনতে পারে। শুধুমাত্র কিছু আধুনিকীকরণের প্রয়োজন রয়েছে।"