অর্ণব আইচ: পুলিশের চোখ এড়াতে রাতারাতি সার্কাসের কর্মীর ছদ্মবেশে গা ঢাকা দিয়েছিল ‘টাকা চোর’ পুরাতন ভৃত্য। কলকাতা থেকে বিহারে পালিয়ে ফের দক্ষিণ কলকাতার পাটুলিতে এসে সার্কাসে কাজ নেয় সে। তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। বিহার থেকে পাওয়া সূত্রের খবরে দর্শক সেজে কলকাতার চারটি সার্কাসে হানা দেয় মধ্য কলকাতার বড়বাজার থানার পুলিশের একটি টিম। পাটুলির সার্কাসে হানা দিয়েই পুলিশ তাকে শনাক্ত করে। নারকেলডাঙার একটি ডেরায় হানা দিয়ে উদ্ধার হয় ১ লাখ টাকা।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির নাম মহম্মদ নৌসাদ। গত কুড়ি বছর ধরে বড়বাজারের একটি দোকানে কাজ করছিল সে। গত বছরের মে মাসে নৌসাদকে তার গদির মালিক ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য দেন। এর আগেও বহুবার সে এই কাজ করেছে। কিন্তু এবার ব্যাংকে না গিয়ে সেই টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় সে। এই ব্যাপারে বড়বাজার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ তদন্ত করতে শুরু করে।
[আরও পড়ুন: আত্মঘাতী স্কোয়াড গড়ে হামলার ছক! হাওড়া থেকে ধৃত ২ ‘আইএস জঙ্গি’কে জেরায় চাঞ্চল্যকর তথ্য]
বিহারের আরারিয়া জেলায় তার সন্ধানে হানা দেন পুলিশ আধিকারিকরা। কিন্তু জানতে পারেন, বাড়িতে কিছুদিনের জন্য থেকে বেশ কিছু টাকা খরচ করেছে। তার পর হঠাৎই উধাও হয়ে গিয়েছে সে। পুলিশের কাছে তথ্য আসে যে, কুড়ি বছর আগে সার্কাসের গাড়ি চালাত সে। এর মধ্যেই পুলিশ আধিকারিকরা একটি সূত্র মারফৎ জানতে পারেন যে, নৌসাদ তার এক পরিচিত যুবকের সঙ্গে কলকাতায় ফিরে এসেছে। ওই যুবক কোনও সার্কাসে কাজ করেন। নৌসাদের সঙ্গে সার্কাস যোগের সূত্র ধরেই এবার পুলিশ শুরু করে তদন্ত।
উত্তর থেকে দক্ষিণে, কলকাতা ও তার আশপাশে চারটি সার্কাসের সন্ধান পায় পুলিশ। যাতে নৌসাদ টের না পায়, তাই দর্শক সেজেই পুলিশ সার্কাসগুলিতে যায়। প্রথম তিনটিতে সার্কাসের কর্মীদের নৌসাদের ছবি দেখানোর পর তার সন্ধান না পেলেও হতাশ হননি পুলিশ আধিকারিকরা। পাটুলিতে চতুর্থ সার্কাসে হানা দিতেই তার ছবি দেখে অন্য কর্মচারীরা শনাক্ত করেন। মাত্র কয়েকদিন আগেই সার্কাসে ধোয়া, মোছা ও গাড়ি চালানোর কাজ নিয়েছিল সে। পালানোর আগেই গ্রেপ্তার হয় সে। জানা যায়, চুরির পর এক লাখ টাকা নারকেলডাঙায় এক পরিচিতকে রাখতে দিয়েছিল। বাকি টাকা উদ্ধার করতে তাকে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।