সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুসলমান যুবকের হাত থেকে খাবার নিতে অস্বীকার করে আদতে সংবিধানের অবমাননা করেছেন জোম্যাটো অ্যাপ ব্যবহারকারী অমিত শুক্লা৷ এই অভিযোগে বিতর্কিত গ্রাহক অমিত শুক্লাকে নোটিস পাঠাল জব্বলপুর পুলিশ৷ কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা কিংবা ধর্ম নিয়ে ভেদাভেদ তৈরির চেষ্টা সংবিধান বিরোধী বলেই উল্লেখ রয়েছে ওই নোটিসে৷ পুলিশ সুপার অমিত সিং জানিয়েছেন, আপাতত নজরদারিতে রাখা হয়েছে অমিত শুক্লাকে৷ সংবিধান অবমাননার যথাযথ প্রমাণ মিললে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলেও পুলিশসূত্রে খবর৷
[আরও পড়ুন: জম্মু-কাশ্মীরে সেনা কনভয়ে আইইডি বিস্ফোরণ, সোপিয়ানে শহিদ ১ জওয়ান]
গত বুধবার জব্বলপুরের বাসিন্দা অমিত শুক্লা জোম্যাটোর মাধ্যমে নিরামিষ খাবার অর্ডার দেন৷ তাঁর কাছে মেসেজ আসে ফৈয়াজ নামে এক যুবক খাবার পৌঁছে দেবে৷ মুহূর্তের মধ্যে ফৈয়াজ ফোন করেন অমিতকে৷ ঠিকানা জানতে চাওয়া হয়৷ ফৈয়াজের দাবি, ফোনের ওপার থেকে অমিত ধর্ম নিয়ে খোঁচা দিয়ে নানা কথা শোনান তাঁকে৷ এরপর অমিত জোম্যাটোকে জানান অ-হিন্দু কারও হাত থেকে খাবার নেবেন না তিনি৷ তবে তাতে মনমতো উত্তর দেয়নি ওই সংস্থা৷ আবারও অমিত জোম্যাটোকে জানান, তবে তিনি খাবারের অর্ডার বাতিল করবেন৷ খাবার সরবরাহকারী ওই সংস্থার তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, যাই করুন না কেন টাকা ফেরত পাবেন না৷ তাতে রাজি হয়ে যান অমিত৷ বাতিল করে দেন অর্ডার৷
[আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে প্লাবিত রাস্তায় কুমির! প্রাণ বাঁচাতে এ কী করল সারমেয়?]
কর্মজীবনে প্রথমবার এমন অভিজ্ঞতায় হকচকিয়ে যান ফৈয়াজ৷ যদিও পাশে পান জোম্যাটোকে৷ ওই খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থার তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘‘খাবারের কোনও ধর্ম হয় না, খাবারই ধর্ম৷’’ জোম্যাটোর এমন পদক্ষেপে দ্বিধাবিভক্ত নেটিজেনরা৷ অনেকেই বলছেন, ব্যবসার কথা না ভেবে জোম্যাটো যা করেছে তা অবশ্যই প্রশংসাযোগ্য৷ আবার কেউ কেউ খাবার নিয়ে ধর্ম প্রসঙ্গে টেনে এনেছেন হালাল-ঝটকা ইস্যু৷ ধর্ম নিয়ে কোনও মাথাব্যথা না সত্ত্বেও কীভাবে খাদ্যতালিকায় ‘হালাল’ শব্দ ব্যবহার করে জোম্যাটো, সেই প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনদের একাংশ৷ ‘ঝটকা’ শব্দটিও ব্যবহারের দাবিও জানিয়েছেন হিন্দুত্ববাদীরা৷ যদিও নেটিজেনদের পালটা জবাবে একটি খোলা চিঠি লিখেছে ওই খাবার সরবরাহকারী সংস্থা৷ জোম্যাটো কর্তৃপক্ষের দাবি,‘‘আমরা নিজেরা খাবার তৈরি করি না৷ যেকোনও রেস্তরাঁয় বিক্রি হওয়া খাবার শুধুমাত্র ক্রেতার বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়াই কাজ৷ তাই রেস্তরাঁর খাদ্যতালিকায় যা আছে তাই দেখা যায় আমাদের অ্যাপে৷ ‘হালাল’ শব্দ ব্যবহার করে রেস্তরাঁ৷ আমরা না৷ রেস্তরাঁ ‘ঝটকা’ শব্দ ব্যবহার করলে আমরাও করব৷’’
জোম্যাটোর জবাবে যদিও কিছুই আসে যায় না হিন্দুত্ববাদী নেটিজেনদের৷ পরিবর্তে ওই খাবার সরবরাহকারী সংস্থাকে বয়কটের ডাক দিয়েছেন তাঁরা৷
The post ধর্মীয় ভেদাভেদের চেষ্টা সংবিধান বিরোধী, এই যু্ক্তিতে জোম্যাটোর গ্রাহককে নোটিস appeared first on Sangbad Pratidin.