অর্ণব দাস, বারাসত: মাঠ বিক্রির চক্রান্তে জড়িত থাকার অভিযোগে পদ খুইয়েছেন পানিহাটি পুরসভার সদ্যপ্রাক্তন চেয়ারম্যান মলয় রায়। তাঁর বদলে শুক্রবার নতুন পুরপ্রধান নির্বাচিত হলেন পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সোমনাথ দে। তবে তাঁকে চেয়ারম্যান নিয়োগ করা নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন অভয়ার বাবা। এই খবর শুনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি প্রশ্ন তুললেন, ''একজন ক্রিমিনাল চেয়ারম্যান কী করে হয়?'' প্রসঙ্গত, অভয়ার মৃত্যুর পর তাঁর দেহ দ্রুত সৎকারের ক্ষেত্রে সোমনাথ দে-র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। পরিবারের অভিযোগ, খুন সংক্রান্ত তথ্য প্রমাণ লোপাটের সঙ্গে জড়িত নতুন পুরপ্রধান। তাই তাঁর নিয়োগে এত আপত্তি তুলছেন অভয়ার বাবা।

পানিহাটি পুরসভায় ডামাডোল চলছিল বেশ কয়েকদিন ধরে। অমরাবতীর মাঠ বিক্রি করার পরিকল্পনায় খোদ পুর-চেয়ারম্যান মলয় রায় জড়িত বলে অভিযোগ ওঠায় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁকে ইস্তফা দিতে হয়। ইস্তফাপত্র গৃহীত হওয়ার পর বোর্ড মিটিং ডেকে শুক্রবার নতুন পুরপ্রধান নির্বাচিত করা হয় সোমনাথ দে-কে। মলয় রায় পুরপ্রধান থাকাকালীন সোমনাথবাবু ছিলেন পূর্ত বিভাগের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলর। মলয়ের ইস্তফার সময় থেকে আজ অর্থাৎ নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত অস্থায়ী প্রশাসনিক বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন সোমনাথবাবু। তাঁকেই শেষমেশ পুরপ্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হল।
এরপরই পানিহাটির বাসিন্দা, আর জি করের নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা এ বিষয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন। তাঁর কথায়, ''শিয়ালদহ আদালতের রায়ে আমার মেয়ের প্রতি হওয়া নৃশংস ঘটনায় যে ক'জন তথ্যপ্রমাণ লোপাটের সঙ্গে জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে সোমনাথ দে-র নাম আছে। আমরা জানি, তিনি সেদিন আর জি কর থেকে মৃতদেহ দ্রুত নিয়ে এসে দাহকাজের ব্যবস্থা করেছিলেন। এমনকী শ্মশানেও গিয়েছিলেন। সেখানকার নথিতে জ্বলজ্বল করেছে সোমনাথ দে-র স্বাক্ষর। তিনি অস্বীকার তো করতে পারবেন না।'' অভয়ার বাবার আরও দাবি, ''আমার মেয়ের মৃত্যুর পর প্রমাণ লোপাটে অত্যন্ত তৎপরতা দেখিয়েছিলেন। আর মুখে বলেছিলেন, আমাদের সাহায্য করছেন। কী সাহায্য, আমরা নিজেরাই জানি না। উনি তো ক্রিমিনাল, সেই অপরাধীকে কী করে এত উঁচু পদ দেওয়া হয়?এটা দেখে আমরা বিস্মিত।''