স্টাফ রিপোর্টার : ভারতের মতো দেশে ডাক্তারি করা খুব কঠিন। এদেশে যেমন অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব রয়েছে, তেমনই রয়েছে দারিদ্র। চিকিৎসকের কাছে অনেকেই নিজের কষ্ট-যন্ত্রণা গোপন করে যান। তাই চিকিৎসকদের আরও বেশি দরদী মন নিয়ে রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা করতে হবে। এমনই পরামর্শ দিলেন অধ্যাপক অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhijit Vinayak Banerjee)।
মঙ্গলবার ‘লিভার ফাউন্ডেশন’ (Leaver Foundation) আয়োজিত এক বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অভিজিৎ বিনায়ক বলেন, “বিদেশে রোগীর ষোলো রকমের টেস্ট করিয়ে তারপর চিকিৎসকরা রোগনির্ণয় করেন। আর আমাদের এখানে টেস্টের কথা বললেই রোগীরা পালিয়ে যান। মহিলারা এখানে নিজের কষ্টের কথা বলাকে অধিকার বলে মনেই করেন না। গোয়েন্দাগিরি করে তাঁদের রোগের উৎসমূল জানতে হয়। এখানে রোগীদের আর্থসামাজিক পরিকাঠামো বিচার করাও জরুরি।” নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের উপলব্ধি, এত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও যে চিকিৎসকরা দরদী মন নিয়ে কাজ করেছেন বা করছেন তাঁরা সত্যিই কৃতিত্বের দাবিদার।
[আরও পড়ুন: সংকটের শ্রীলঙ্কায় আজ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, ভারতের সাহায্যপ্রার্থী দ্বীপরাষ্ট্রের বিরোধী নেতা]
মঙ্গলবার এমনই শতাধিক বাঙালি চিকিৎসকের জীবন আলেখ্যভরা বইয়ের উদ্বোধন করলেন তিনি। যাঁদের মধ্যে চারজন চিকিৎসক সশরীর উপস্থিত রইলেন বই প্রকাশের মঞ্চে। সুকুমার মুখোপাধ্যায়, সুবীরকুমার চট্টোপাধ্যায়, দেবেন্দ্রনাথ গুহ মজুমদার ও অরুণাভ চৌধুরি। বই নির্মাণের গল্প দিয়ে এদিনের অনুষ্ঠানের সূচনা করেন লিভার ফাউন্ডেশনের সচিব পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়। ডা. অশোকানন্দ কোনারের সঙ্গে জুটি বেঁধে ডা. অভিজিৎ চৌধুরি ‘একশো তারার আলো’ বইটির সম্পাদনা করেছেন।
অভিজিৎবাবু জানালেন, “ইতিহাস নয়, পেশার বাইরে সমাজকে কীভাবে চিকিৎসকরা আঁকড়ে ধরেছে কথকতার ঢঙে তারই গল্প বলেছে ‘একশো তারার আলো’। আগামীতে হাজার তারার আলো মলাটবন্দি হবে।” ১৮০৬ সাল থেকে ২০২২, দুই শতাব্দীর বেশি সময়কালকে ধরার চেষ্টা করেছেন অভিজিৎবাবুরা। মধুসূদন গুপ্ত, রাধাগোবিন্দ কর, কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়, নীলরতন সরকার, বিধানচন্দ্র রায়, উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী, মণি ছেত্রী–চিকিৎসাবিজ্ঞানের দীর্ঘ পথচলাকে ধরার চেষ্টা হয়েছে। রয়েছে রবি ঠাকুরের অস্ত্রোপচার করা বাঙালি সার্জন ডা. ললিতমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্পও।
[আরও পড়ুন: রায়গঞ্জে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নয়ানজুলিতে শিলিগুড়িগামী বাস, মৃত ১, নিখোঁজ শিশু]
মলাটবন্দি হয়েছেন সুবীর দত্ত, স্মরজিৎ জানার মতো ‘চিকিৎসাজ্যোতি’-রাও। এঁরা কেউ মুনি-ঋষির মতো ছাত্র পড়িয়েছেন, কেউ নাকে অক্সিজেনের নল গুঁজে রোগী দেখেছেন উপদ্রুত এলাকায় চিকিৎসা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। জানালেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত আরও দুই বক্তা অভিনেতা দেবশঙ্কর হালদার ও ইতিহাসবিদ
সুগত বসু।