সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘আই অ্যাম নট সাপোজড টু টেল ইউ দ্যাট।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন ট্রেন্ডিংয়ের শীর্ষে এই হ্যাশট্যাগটি। একথা শোনা গিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনা পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের মুখে। শত্রু দেশে দাঁড়িয়েও পাকসেনাকে কোনও গোপন তথ্য দেননি তিনি। সাফ জানিয়ে দেন, তিনি কোনও তথ্য দিতে পারবেন না। ভারতীয় সেনা সম্পর্কে কোনও তথ্য দিতে তিনি বাধ্য নন। যে দৃশ্যের ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল নেটদুনিয়ায়। তাঁর এমন সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানিয়েছে ভারতবাসী। কিন্তু বন্দি অবস্থাতেও অভিনন্দন একথা বললেন কীভাবে? এমন সাহস কীভাবে দেখালেন তিনি? আসলে এর নেপথ্যে রয়েছে জেনেভা কনভেনশন।
[জওয়ানদের চোখে প্রতিশোধের আগুন, অশান্তি জারি কাশ্মীরে]
কী এই জেনেভা কনভেনশনে? এটি আসলে যুদ্ধপরাধ সংক্রান্ত আইনসিদ্ধ একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। যুদ্ধবন্দিদের মৌলিক অধিকারগুলো সুনিশ্চিত করার কথাই এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৮৬৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত মোট চারটে চুক্তি হয়েছে। যার মধ্যে ১৯৪৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর হওয়া শেষ চুক্তিটাই মূলত মেনে চলা হয়। প্রথম চুক্তিতেই অবশ্য বলা হয়েছিল, আহত সেনাদের সঙ্গে মানুষের মতো আচরণ করতে হবে। তাঁদের অপমান করার কোনও অধিকার নেই। হিংসাত্মকও হওয়া যাবে না। জাত-বর্ণ, ধর্ম-লিঙ্গ নির্বিশেষে প্রত্যেক বন্দিরই থাকা-খাওয়া, পোশাক-পরিধানের সব ব্যবস্থাও করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসাও করাতে হবে। প্রকৃত বিচার ছাড়া মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার অনুমতি নেই। ১৯০৬ সালে দ্বিতীয় চুক্তিতে উল্লেখ আছে, রণতরীর আহত আর অসুস্থ সেনাদের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য।
তবে ১৯২৯ সালে তৃতীয় চুক্তিটির ভিত্তিতেই পাকসেনার সামনে নির্ভয়ে অভিনন্দন বলতে পেরেছিলেন ‘I’m not supposed to tell you that।’ কারণ এ চুক্তিতে স্পষ্ট করা হয়েছে যে যুদ্ধবন্দিরা শুধুমাত্র তাঁদের নাম, পদ আর পরিচয় জানাতে বাধ্য। আর কোনও তথ্য তাঁর থেকে জোর করে আদায় করা যাবে না। অভিনন্দন যে এ চুক্তির সবটাই জানেন, তা ধরে নেওয়াই যায়। আর তাই দৃঢ় কণ্ঠে পাকসেনার প্রশ্নের উত্তরে ‘না’ বলতে পেরেছিলেন। তবে পাকিস্তানে বন্দি অবস্থায় এমন নির্ভীক আচরণ করা তো মুখের কথা নয়। তাই তো দেশের বীর সন্তানের জয়গান গাইছেন প্রত্যেকেই।
[অকথ্য মানসিক নির্যাতনের শিকার, দেশে ফিরে অভিজ্ঞতা জানালেন অভিনন্দন]
বিশ্বের ১৯৪ টি দেশ জেনেভা কনভেনশনের চুক্তি মেনে চলতে রাজি হয়েছিল। যার মধ্যে অন্যতম পাকিস্তান। এবার প্রশ্ন হল চুক্তির শর্ত ভঙ্গ হলে কী হবে? সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে হবে বিচারের জন্য। যে কারণে আন্তর্জাতিক আদালতে পৌঁছেছে পাকিস্তানে বন্দি ভারতীয় কুলভূষণ যাদবের মামলাটি।
The post ‘I’m not supposed to tell you that’ কেন একথা বলেছিলেন অভিনন্দন? appeared first on Sangbad Pratidin.