shono
Advertisement

নজরে কুড়মি ভোট, সমস্যা দ্রুত মেটাতে পুরুলিয়া জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ অভিষেকের

নিজেদের মধ্যে সমস্যা মেটাতে ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
Posted: 07:32 PM May 26, 2023Updated: 07:32 PM May 26, 2023

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: তফসিলি উপজাতির আওতাভুক্ত হতে আদিবাসী কুড়মি (Kurmi) সম্প্রদায়ের আন্দোলন চলছেই। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের উপর চাপ তৈরি করতে চেয়ে পথেও নেমেছেন তাঁরা। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ জঙ্গলমহল সফরে গেলে তাঁকে ঘেরাওয়ের পরিকল্পনা ছিল কুড়মিদের। তবে কুড়মিদের প্রতি গোড়া থেকে সহযোগিতার বার্তা দিয়ে, আলাপ-আলোচনার রাস্তা খোলা রেখেছিলেন স্বয়ং অভিষেকই। সেই কারণে ঘেরাওয়ের মতো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঘটেনি। শুক্রবার পুরুলিয়া (Purulia) জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে নিয়ে বান্দোয়ানের বৈঠকে তিনি দলের নেতাদের সাফ বার্তা দিলেন, কুড়মিদের সমস্যা দ্রুত মিটিয়ে ফেলতে হবে। কাছে টানতে হবে তাঁদের। রাজ্য সরকারের সমস্ত উন্নয়নমূলক কাজ ও কুড়মিদের প্রতি সরকারের সহমর্মিতার মনোভাব তুলে ধরতে হবে। এছাড়া যেখানে যেখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে, সেখানে সকলে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মিটিয়ে ফেলার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

Advertisement

এদিন দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে কুড়মি সমস্যা মেটানোর ভার অভিষেক দিলেন তাঁদেরই দুই প্রতিনিধিকে। প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো এবং বাঘমুন্ডির বিধায়ক সুশান্ত মাহাতোকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, অজিত মাইতি কুড়মিদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার পর দাবি মেনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চেয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে কুরুচিকর কথা বলায় অখিল গিরির হয়ে ক্ষমা চান স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। শাসকদলের একাধিক নেতা বারবার তাঁদের দাবির পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। আর দিলীপ ঘোষরা আক্রমণাত্মক মন্তব্যের পরও এতটুকু দুঃখপ্রকাশ করেননি। এসব ইস্যু কেন কুড়মিদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে না? কেন তাঁরা তৃণমূলকে ভুল বুঝছে? ঘেরাও, বিক্ষোভ করছে? অভিষেকের পরামর্শ, রাজনৈতিক শক্তি দিয়েই কুড়মিদের আন্দোলন প্রশমনে উদ্যোগী হতে হবে জেলা নেতৃত্বকে।

[আরও পড়ুন: দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন জামাই আশিস বিদ্যার্থী, কী প্রতিক্রিয়া প্রাক্তন শাশুড়ি শকুন্তলার?]

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে বান্দোয়ানে প্রবেশের পথে বরডি গ্রামে কুড়মিদের সঙ্গে কথা বলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের দাবির কথা মন দিয়ে শোনেন। আশ্বাস দেন, রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারের মধ্যে যতটা সম্ভব, সব কিছু দিয়েই সমস্যার চেষ্টা চলছে। দিল্লির দরবারেও তাঁদের পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এরপরই শুক্রবার দলীয় নেতৃত্বকে কুড়মি সমস্যা নিয়ে সঠিক পথে সক্রিয় হওয়ার বার্তা দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাঘমুন্ডির বিধায়ক সুশান্তর মাহাতোর সঙ্গে ঝালদা ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ সুলেমানের দ্বন্দ্ব রয়েছে। যার জেরে সাংগঠনিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া জেলা সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জেলা সভাপতির সৌমেন বেলথরিয়ার বাবা তথা প্রাক্তন বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়ার বরাবরেরই খুব খারাপ সম্পর্ক। এমনকী অভিষেকের সামনে সুজয়বাবু এও বলেন, ‘ও চিরশত্রু’। এসব শুনে সকলের উদ্দেশেই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কড়া বার্তা, যেখানে যত এরকম সমস্যা রয়েছে, ৭২ ঘণ্টার তা মিটিয়ে হাতে হাত ধরে রাজনৈতিক লড়াইয়ে নামতে হবে। হুড়া ব্লকে এই মুহূর্তে দলের কোনও সভাপতি নেই। তাই কাজ থমকে রয়েছে। এ বিষয়ে অভিষেককে জানান রাজ্যের মন্ত্রীর তথা বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুডু। তাঁকে ৩জনের নাম পাঠানোর কথা বলেন অভিষেক। দ্রুত ব্লক সভাপতি পদে কাউকে আনা হবে বলে আশ্বাস দেন।

[আরও পড়ুন: ‘অভিষেককে ব্যক্তিগতভাবে চিনি না, কষ্টে চিঠি লিখেছি’, সিবিআই জেরায় দাবি কুন্তলের]

বুধবার কাশীপুর মহিলা ফুটবল অ্যাকাডেমিতে গিয়ে সেখানকার মেয়েদের আবদারে ফুটবলে সই করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের বৈঠকে তাঁদের প্রত্যেকের জন্য ২০ হাজার টাকা করে তুলে দিলেন জেলা নেতৃত্বের হাতে। এছাড়া মানবাজারের বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন যুবক ঈশ্বর বাউড়ি, যাঁর সঙ্গে হাঁটু গেড়ে বসে কথা বলেছিলেন, তাঁর জন্য দিলেন ৫০ হাজার টাকা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement