ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ভারচুয়াল বৈঠকে অভিষেকের কাছে ধমক খেলেন উত্তরবঙ্গের দুই দাপুটে তৃণমূল নেতা। অভ্যন্তরীণ কোন্দল, দলীয় কাজে অবহেলার মতো একাধিক ইস্যুতে উদয়ন গুহ ও রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক। শুধু এঁরা দুজন নয়, অন্যান্য পদাধিকারীদেরও নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা মিটিয়ে ফেলার ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছেন তিনি। সমস্যা না মিটলে পদাধিকারীদের সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের বিক্ষিপ্ত গোষ্ঠীকোন্দল মিটিয়ে ফেলতে মরিয়া তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সোমবার সাংগাঠনিক জেলার সভাপতিদের নিয়ে ভারচুয়াল বৈঠকে বসেছিলেন সুব্রত বক্সি ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তাঁদের অভিযোগ, “অনেকে বিধায়ক কাজ করেননি।” উদয়ন গুহ ও রবীন্দ্রনাথ ঘোষের উদ্দেশে অভিষেকের প্রশ্ন, “আপনাদের এলাকায় কেউ কেন যেতে পারবে না? জলপাইগুড়ির দুটো অঞ্চলে ব্লক সভাপতির সাথে অঞ্চল সভাপতির ঝামেলা কেন? কেন দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি করেননি?” এরপরই সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেন তিনি। বলেন,”দুটো দিন সময় দিলাম। কাজ না হলে পদ থেকে সরিয়ে দেব।”
[আরও পড়ুন: ‘আই লাভ কেওড়াতলা মহাশ্মশান’! সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘খবর’ ছড়াতেই মেজাজ হারালেন মুখ্যমন্ত্রী]
শুধু জলপাইগুড়ি নয়, সমস্যা ছিল আরও কয়েকটি জেলায়। পূর্ণ ব্লক, অঞ্চল বা জেলা কমিটি গঠন হয়নি। সেক্ষেত্রেও কঠোর ভূমিকায় দেখা যা অভিষেককে। জানিয়ে দেন, ১৪ এপ্রিলের দুপুর ১২টার মধ্যে পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি তৈরি করতে হবে। ১৭ তারিখের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ব্লক কমিটি ও ২৪ তারিখের মধ্য়ে পূর্ণাঙ্গ অঞ্চল কমিটি তৈরি করতে হবে।
জেলা সভাপতিদের উদ্দেশে অভিষেকের বার্তা কেউ ইগো নিয়ে বসে থাকবেন না। বলেন, “যে পদাধিকারী ইগো নিয়ে বসে থাকবেন। ছোটখাটো সমস্যার সমাধান করবেন না। তাঁরা দল ছেড়ে চলে যান।” ব্লক সভাপতিদের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, “আচ্ছা, আপনারা বুথ কর্মীদের খোঁজ কেন রাখেন না? তাঁদের আপনারা কী ভাবছেন? অফিসে বসে হোয়াটসঅ্যাপে দল চলবে না কি? পরের ভোটে জিতবেন কী করে? মানুষের সাথে যোগাযোগ বাড়ান।” ব্লক সভাপতিদের নিয়মিত বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি জেলা সভাপতিদের উদ্দেশে কড়া ভাষায় বার্তা দেন অভিষেক। বিধায়করাও এদিন ছাড় পাননি। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি,”বিধায়করা ভাববেন না আপনার নির্বাচনী এলাকা আপনাদের পৈতৃক সম্পত্তি। মানুষ না চাইলে,ভগবান চাইলেও জিততে পারবেন না।” নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নেওয়ার বার্তাও দেন তিনি।