সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বৃহস্পতিবার সকাল সকালই মন খারাপের খবর। জনপ্রিয় অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণ সংবাদে বিষণ্ণতা ছড়িয়ে পড়ল টলিউডে। সিনেমার জগতে পা দিয়েই নজর কেড়ে নেন অভিষেক (Abhishek Chatterjee )। প্রথম ছবি থেকেই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন টলিউডে থাকতে এসেছেন তিনি। সেই সময়ে তাপস পাল, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় চুটিয়ে অভিনয় করছেন। তবে এই দুই অভিনেতার পাশে নিজের মতো করেই নজর কেড়ে নিয়েছিলেন অভিষেক। একের পর এক ছবি ঝুলিতে। এমনকী, একই বছরে একাধিক ছবিতেও অভিনয় করেন তিনি। আর সব ছবিই বক্স অফিসে ছিল সুপারহিট।
অভিষেকের কেরিয়ার শুরু ১৯৮৬ সালে। ছবির নাম ‘পথভোলা’। তারপর ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে একের পর এক সুপারহিট ছবিতে অভিনয় করেন অভিষেক। যার মধ্যে রয়েছে, ‘অমর প্রেম’, ‘ওরা চারজন’, ‘হারাণের নাতজামাই’, ‘পাপী’, ‘তুফান’-এর মতো সিনেমা। নব্বই দশকের শুরু থেকেই সিনেমায় চুটিয়ে অভিনয় করেছেন অভিষেক। ১৯৯০ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে প্রায় পঞ্চাশের বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন অভিষেক। যার মধ্যে ‘মায়ের আশীর্বাদ’, ‘মেজো বউ’, ‘সিঁথির সিঁদুর’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘লাঠি’, ‘আলো’, ‘চৌধুরী পরিবারে’র মতো ছবি জনপ্রিয় হয়েছিল। তবে শুধু কমার্সিয়াল ছবিতেই নয়, ঋতুপর্ণ ঘোষের পরিচালনায় ‘দহন’ ছবিতেও আলাদা করে নজর কেড়েছিলেন অভিষেক।
[আরও পড়ুন:অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের অকাল প্রয়াণে স্তম্ভিত সহকর্মীরা, শোকপ্রকাশ শতাব্দী-লাবণী-দেব-অঙ্কুশদের]
অভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ছিলেন। তবুও ধীরে ধীরে সিনেমা থেকে সরে আসতে শুরু করেন অভিষেক। ভাল অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও ছবির নায়ক নন, বরং সহ-অভিনেতার চরিত্রের প্রস্তাব পেতে শুরু করেন তিনি। এর বিরুদ্ধে ক্ষোভও প্রকাশ করেছিলেন অভিষেক। একবার এক সাক্ষাৎকারে টলিউডের রাজনীতির শিকার হওয়া নিয়েও মুখ খুলতে দেখা গিয়েছিল অভিষেক চট্টোপাধ্যায়কে। অভিযোগ তুলেছিলেন টলিউডের সুপারস্টারদের বিরুদ্ধেও। বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে।
তবে সিনেমা থেকে সরে গেলেও, অভিনয়কে আঁকড়ে ধরেই বেঁচেছিলেন অভিষেক (Abhishek Chatterjee )। তাই তো একের পর এক ধারাবাহিকে অভিনয় করে দর্শকদের মনের আরও কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। প্রথম ধারাবাহিক ‘টাপুর টুপুর’, ‘আঁচল’ এবং পরে ‘মোহর’, ‘চোখের তারা তুই’, ‘ইচ্ছে নদী’, ‘অন্দরমহল’, ‘কুসুম দোলা’, ‘ফাগুন বউয়ে’র মতো ধারাবাহিকে চুটিয়ে অভিনয় করেছেন অভিষেক। ‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকে গুনগুনের বাবার চরিত্রে অভিনয় করে মন জিতে নেন তিনি।
যে মানুষটি সারাজীবন লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশন এই তিনটি শব্দকে জীবনের মূলমন্ত্র বানিয়ে ফেলেছিলেন, শুনতে অবাক লাগলেও, বুধবার রাতে এক রিয়্যালিটি শোয়ের শুটিং ফ্লোরেই অসুস্থ বোধ করেন। আর বৃহস্পতিবার সকাল হতেই তাঁর প্রয়াণের খবরে স্তব্ধ টলিউড।