অভিষেক চৌধুরী, কালনা: একটা-দুটো অভিযোগ নয়। রাজ্যের বিভিন্ন থানায় তার নামে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। চুরি-সহ জাল নোটের কারবার, অস্ত্র আইনেও এর আগে বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রায় দেড় মাস আগে শক্তিগড় থানা পুলিশের হেফাজত থেকেও পালাতে সক্ষম হয় সে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই পুলিশের জালেই ধরা পড়ে যায় সে। এমনই এক দাগী আসামী এবার পালিয়ে গেল কালনা আদালত থেকে!
জানা গিয়েছে, আসামীর নাম বাসুদেব মণ্ডল। তার বাড়ি হুগলী জেলার বলাগর থানার ধাত্রীননই গ্রামে। শক্তিগড় থানা থেকে পালানোর পর তাকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি-সহ কালনা থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার কালনা আদালতের এজলাসে তোলার আগেই পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে আরও একবার পালিয়ে যায় অস্ত্র আইনে অভিযুক্ত বাসুদেব। পুলিশ জানায়, কালনা থানা এলাকা থেকে অভিযুক্তকে ধরা হয়। তার কাছ থেকে ১টি পাইপ গান, ১ টি এয়ার গান, ১ টি গুলি উদ্ধার হয়।
এদিকে, কালনা আদালত চত্বরে এজলাসের মুখ থেকে আসামী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন কালনা মহকুমার পুলিশ আধিকারিকরা। খতিয়ে দেখেন বিভিন্ন প্রান্তে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ। আর এই ঘটনাকে ঘিরেই আইনজীবীদের একাংশ আদালত চত্বরে পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকা, ঢিলেঢালা নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। দাবি জানান পর্যাপ্ত পুলিশের।
[আরও পড়ুন: ৩০০ সিলিন্ডার নিয়ে পালিয়ে গেল গ্যাস অফিসের কর্মী! চরম ভোগান্তির শিকার বনগাঁর বাসিন্দারা]
পুলিশ সূত্রে খবর, বাসুদেব মণ্ডলের বিরুদ্ধে হুগলির বলাগর, পাণ্ডুয়া, কলকাতার নিউটাউন, বাগুইআটি, পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়, জামালপুরের মত বেশ কয়েকটি থানায় বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এদিন অন্য আসামীদের পাশাপাশি তাকেও কোমরে দড়ি পড়িয়ে কালনা আদালতের এজলাসে তোলা হচ্ছিল। ঠিক সেই সময় সে দৌড়ে পালায়। আদালত চত্বরে ভিড়ের মাঝে কোথাও ওই আসামী মিশে গিয়েছে কি না পুলিশ তাও খতিয়ে দেখে। অন্যদিকে এই ঘটনার পরেই মুখ খোলেন আইনজীবীদের একাংশ।
আইনজীবী অরিন্দম বাজপেয়ী বলেন, “ এটাই প্রথম নয়, এর আগেও কালনা আদালত থেকে দুবার আসামী পালিয়ে গিয়েছে। যদিও সৌভাগ্যক্রমে আদালত চত্বর থেকেই ধরা পরে। যদিও তা বহুদিন আগে। এদিন এজলাস চলাকালীন আসামী পালিয়ে যায়। এখানে পুলিশ থাকলেও সংখ্যাটা পর্যাপ্ত নয়। অল্প সংখ্যক পুলিশ থাকলেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে পুলিশ তুলে নেওয়া হয়। এর ফলে আদালতের বিচার ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়। এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কেসের বিভিন্ন ধরনের আসামী আসে। তাই সাক্ষীদেরও আশঙ্কা থাকে নিরাপত্তা নিয়ে। তাই পর্যাপ্ত পুলিশ দিয়ে আদালত চত্বরে নিরাপত্তা বাড়ানো দরকার। এখানে বিভিন্ন সময়ে মোবাইল, জিনিসপত্র চুরির ঘটনাও ঘটে।” কালনা এসডিপিও রাকেশ কুমার চৌধুরি জানান, কীভাবে আসামী পালিয়ে গেল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তার খোঁজ চালানো হচ্ছে।