সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের ঝিনাইদহের সাংসদ খুনে অন্যতম অভিযুক্ত সিয়াম এবার সিআইডি হেফাজতে। শুক্রবার তাকে পশ্চিমবঙ্গের তদন্তকারী সংস্থার কাছে হস্তান্তরের খবরটি জানান ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। এর আগে নেপালে সিয়ামের সঙ্গে কয়েক দফায় কথা বলেছেন বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা। আনোয়ারুল হত্যাকারীদের মধ্যে উঠে এসেছিল সিয়ামের নাম। খুন করার পর নেপালে গা ঢাকা দিয়েছিল সে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। নেপাল পুলিশ তাকে আটক করেছিল তাকে।
এই হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকেই যৌথভাবে তদন্ত করছে দুদেশ। জুন মাসের শুরুতে সিয়ামকে ধরতে নেপাল গিয়েছিলেন দুদেশের তদন্তকারীরাই। কিন্তু দিন চারেক আগেই বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন, যেহেতু কলকাতায় বাংলাদেশের সাংসদ খুন হয়েছেন তাই ঘটনার তদন্তভার ভারতেরই। এদিকে, অভিযুক্ত সিয়ামকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিল কলকাতা পুলিশও। সেই মতোই সিয়ামকে ভারতের কাছেই হস্তান্তর করে নেপাল পুলিশ। এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে সেই বিষয়টিই নিশ্চিত করেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। সিয়াম এখন সিআইডির হেফাজতে। তবে নারকীয় এই হত্যাকাণ্ডের জট খুলতে এখনও একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা ও কলকাতা।
[আরও পড়ুন: উপজেলা নির্বাচনের বিজয় মিছিলে অশান্তি, গুলিতে প্রাণ গেল শাসকদলের যুবনেতার!]
অন্যদিকে, যতদিন যাচ্ছে বাংলাদেশের সাংসদ খুনে আরও অনেকের জড়িত থাকার খবর মিলছে। বৃহস্পতিবার এই কাণ্ডে ধৃত শিমুল ভূঁইয়ার এক নিকটাত্মীয় কাজি কামাল আহমেদ বাবু ওরফে ‘গ্যাস বাবু’কে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অভিযোগ, তাঁরও এই ঘটনায় যোগ রয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামি লিগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক। ঝিনাইদহ শহরের আদর্শপাড়া থেকে তাঁকে আটক করা হয়। এনিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শাহিনউদ্দিন জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে ডিবি (গোয়েন্দা) পুলিশের সদস্যরা এসে বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে গিয়েছেন।
এছাড়া আনোয়ারুলের হত্যায় এক তরুণী-সহ আরও তিন জনের জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশের তদন্ত সংস্থা ডিবি। তাঁদের নাম- তাজ মহম্মদ খান ওরফে হাজি, মহম্মদ জামাল হোসেন ও চেলসি চেরি ওরফে আরিয়া। জানা গিয়েছে, এই মামলার তদন্তকারীরা ১০ অভিযুক্তের ব্যাঙ্কের হিসেবের তথ্য পেতে আদালতে আবেদন করেছিলেন। সেই তালিকায় রয়েছে ওই তিনজনের নাম। যদিও চেরি ছাড়া এর আগে বাকিদের নাম আলোচনায় উঠে আসেনি। কারণ এই চেরি ওরফে আরিয়াকেও মূল অভিযুক্ত শাহিনের বান্ধবী হিসেবে চেনে সবাই।
গত জানুয়ারিতে শাহিনের সঙ্গে ভারতে গিয়েছিলেন আরেক অভিযুক্ত শিলাস্তি। সেই সফরে নাকি আরিয়াও ছিলেন। যদিও মৃত সাংসদের দেহাংশ এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। কলকাতা-সহ আসপাশের অঞ্চলে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তবে নিউ টাউনের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া হলুদ মাখানো মাংসের টুকরো আনোয়ারুলের কিনা তা জানতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। ডিএনএ টেস্টের স্যাম্পল দিতে কলকাতায় যাবেন আনোয়ারুলের কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।