সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সকালেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ফেব্রুয়ারি থেকে ফের রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চান। রাতেই অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের (Rudranil Ghosh) কাছে চলে এল বিজেপিতে যোগদানের প্রস্তাব। অভিনেতার সঙ্গে দেখা করে এলেন বিজেপির (BJP) যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক শঙ্কুদেব পণ্ডা। সূত্রের খবর, শঙ্কু রুদ্রনীলকে বিজেপিতে যোগদানের প্রস্তাব দিয়ে এসেছেন। দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এখন কলকাতায় নেই। তিনি ফিরলে তাঁর সঙ্গে দেখা করার প্রস্তাবও দেওয়া হয় রুদ্রকে।
আসলে গতকালই ছিল রুদ্রনীল ঘোষের জন্মদিন। এদিন সকালে ফুল পাঠিয়ে রুদ্রনীলকে শুভেচ্ছা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু সকালেই ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে রুদ্রনীল জানিয়ে দেন, রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হতে চান। আকার ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন, রাজ্য রাজনীতির উত্থান-পতনের কোনও ট্রেন্ডই তাঁর নজর এড়ায়নি। তবে, আপাতত কিছুটা সময় তিনি পরিস্থিতি বুঝে নিতে চাইছেন। আবার, শাসকদলের একাংশের কার্যকলাপে যে তিনি বিশেষ খুশি নন, সে ইঙ্গিতও তাঁর কথায় স্পষ্টই মিলেছে। তারপরই রাতে অভিনেতার বাড়ি যান বিজেপি যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক শঙ্কুদেব পণ্ডা। প্রায় ঘণ্টাখানেক কথা হয় তাঁদের। সূত্রের খবর, এই বৈঠকেই রুদ্রকে গেরুয়া শিবিরে স্বাগত জানান শঙ্কু। কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে দেখা করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়। রুদ্রনীল সেই প্রস্তাবে রাজিও হয়েছেন। যদিও, বিজেপিতে যোগদানের ব্যপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও তিনি নেননি বলেই দাবি অভিনেতার। তিনি জানিয়েছেন,”বিজেপির তরফে একটা প্রস্তাব এসেছে। এর আগে ২০১৯ লোকসভার আগেও ওঁরা আমার সঙ্গে কথা বলেছিল। তবে আমি এখনও স্থির সিদ্ধান্ত নিইনি।” কৈলাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে অভিনেতার বক্তব্য, ” আমি যেহেতু দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, যে কোনও দলের অভিজ্ঞ রাজনীতিকের সঙ্গে দেখা করতে আমার কোনও বাধা নেই।”
[আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতেই সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরছেন রুদ্রনীল ঘোষ? কোন দলে যোগ দেবেন অভিনেতা?]
প্রসঙ্গত, রুদ্রনীল শুরু থেকেই রাজনীতি সচেতন মানুষ। ছাত্রজীবনেও যুক্ত ছিলেন বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে। তবে, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম পর্বের পর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে সখ্য তৈরি হয় তাঁর৷ মুখ্যমন্ত্রীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কয়েক বছর আগে তৃণমূলে (TMC) যোগ দেন তিনি৷ রাজ্যের বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সংসদের সভাপতি হন৷ হাওড়ার একটি কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতির পদেও বসানো হয়েছিল তাঁকে। ২০১৪ ও ২০১৬’র নির্বাচনে ছিলেন শাসকদলের স্টার ক্যাম্পেনার৷ কিন্তু ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সুর কাটে। দূরত্ব তৈরি হয় তৃণমূলের সঙ্গে। সেবছর একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে ছিলেন না রুদ্র। রাজ্যে কাটমানির চল থেকে শুরু করে সিন্ডিকেট রাজ- একাধিক ইস্যুতে শাসকদলের বিরুদ্ধে রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটান টলি অভিনেতা৷ একে একে সমস্ত সরকারি পদ থেকে সরতে হয় তাঁকে। তারপর প্রায় বছর দেড়েক সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি রুদ্রনীলকে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, রুদ্রনীল ঘোষের সাম্প্রতিক কার্যকলাপ ইঙ্গিত করছে, তিনি বিজেপির দিকেই ঝুঁকে আছেন।