তপন বকসি, মুম্বই: মন ভাল নেই পিকু’র ছবিমাসি অর্থাৎ মৌসুমি চট্টোপাধ্যায়ের। নাহ, প্রিয় জামাইবাবু ‘ভাকুদা’ তাঁর এবারের চিন্তার কারণ নন। অভিনেত্রী মৌসুমির রাতের ঘুম ছুটেছে বিবাহিত বড় মেয়ে পায়েলের জন্য। এইটুকুতেই শেষ নয়। পায়েলের শারীরিক অবস্থার নিদারুণ অবনতির জন্য জামাই এবং তাঁর মা-বাবার বিরুদ্ধে বম্বে হাইকোর্ট অবধি দৌড়েছেন মৌসুমি এবং তাঁর স্বামী জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়। আদালতের কাছে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের বউমার অনুরোধ, মেয়ের দেখভালের দায়িত্ব যেন দ্রুত তাঁদের হাতে দেওয়া হয়।
[‘ইরফানকে নিয়ে আবার কলকাতায় শুট করব’, অকপট সুজিত]
২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে অসুস্থ পায়েলের দেখভাল করছেন না বড়জামাই ডিকি সিনহা। জামাই ছাড়াও গোটা ঘটনায় ডিকির মা বাবার ভূমিকাতেও বেজায় ক্ষুব্ধ মুখোপাধ্যায়-দম্পতি। ছেলের কীর্তিতে তাঁর মা-বাবার মুখে কুলুপ। কোনও রাস্তা না দেখে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিনেত্রী। মৌসুমির আইনজীবী সমর্থ মোরে জানান, ২০ নভেম্বর খার থানায় তাঁরা প্রথম ডিকির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। ছোটবেলা থেকে ডায়াবেটিসের শিকার পায়েল। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অসুখ আরও জাঁকিয়ে বসেছে শরীরে। পায়েল এখন পুরোপুরি শয্যাশায়ী। বেশির ভাগ সময়েই জ্ঞান থাকে না। এমন অবস্থায় নিজেদের কাছে রেখে মেয়ের দেখাশোনার ভার নিতে চাইলেও ডিকি তাতে সায় দেননি। তাই পায়েলকে তাঁর মা-বাবার কাছে না পাঠিয়ে নিজের কাছে রেখেছেন। চলতি বছর এপ্রিল মাসে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান পায়েল। তখন থেকে পায়েলকে ফিজিওথেরাপির পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা রোজকার ডায়েটও বদলে দেন। কিন্তু চিকিৎসকের নির্দেশ মেনে পায়েলের ঠিকঠাক দেখভাল হচ্ছে না বলে অভিযোগ এনেছেন মৌসুমি। পায়েলের খাওয়াদাওয়া ঠিক মতো হচ্ছে না। শোনা যাচ্ছে, ফিজিওথেরাপিস্টও আসা বন্ধ করেছেন।
[পরের বছর বিয়ে করছেন রুদ্রনীল?]
২০১০ সালে ব্যবসায়ী ডিকির সঙ্গে বিয়ে হয় পায়েলের। এর পরে পায়েল, জয়ন্ত এবং জামাই ডিকি-তিনজন মিলে ‘তেথিস বিজনেস অ্যান্ড প্রজেক্টস প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি সংস্থা খুলেছিলেন। কার্যত এই তিনজনই ছিলেন সংস্থার ডিরেক্টর। ২০১৬ সালে নিজেদের মধ্যে সংস্থার কাজকর্ম নিয়ে মতানৈক্য শুরু হয়। তখন থেকে শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি শুরু হয় ডিকির। এমনকী, প্রথম দিকে বাড়িতে যে নার্সরা পায়েলের পরিচর্যা করতেন, শেষের কয়েক মাস মাইনে না পাওয়ায় তাঁরাও আর কাজে আসেননি। চার-পাঁচমাস ধরে অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে পায়েলের। আপাতত মেয়ের জীবন নিয়ে প্রতি মুহূর্তে সংশয়ে রয়েছেন মৌসুমি। চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র কিছুই দেখাতে চাননি ডিকি। মৌসুমি আর জয়ন্তকে পায়েলের সঙ্গে দেখাও করতে দিচ্ছেন না। শেষমেশ অবস্থা এমন জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে, যে চাইলেও মেয়ের কাছে যেতে পারছেন না তাঁরা। শুক্রবার অভিনেত্রী মৌসুমিকে ফোনে ধরার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।
The post অত্যাচার করছে জামাই, শয্যাশায়ী মেয়েকে ফিরে পেতে আদালতে মৌসুমি appeared first on Sangbad Pratidin.