ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বিজেপি-সিপিএম আর কংগ্রেস আসলে জগাই-মাধাই আর গদাই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার রাজ্যের এই তিন বিরোধী দলের অসাধু আঁতাঁতের অভিযোগ করেছেন। মঙ্গলবার কার্যত সেই অভিযোগ মেনে নিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। রাজ্যের আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে একের বিরুদ্ধে এক লড়াইয়ের ডাক দিলেন অধীর। বুঝিয়ে দিলেন, সিপিএম (CPIM) তো বটেই নিচুতলায় যদি বিজেপির সঙ্গেও জোট হয়, তাতেও আপত্তি করবে না প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। অধীরের এই বক্তব্যের মধ্যে ষড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছে তৃণমূল।
মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেস (Congress) সভাপতি বলেন, সাগরদিঘিতে সব দল কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছে। তৃণমূল আসলে গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। সেকারণেই সব দল একত্রিত হচ্ছে। কংগ্রেস হাত খুলে আছে, মন খুলে আছে। বামেদের দিকে আমাদের হাত বাড়ানো আছে। আগামী পঞ্চায়েত ভোট এ সাগারদিঘি মডেল হতে পারে। অধীরের স্পষ্ট কথা, যারাই তৃণমূলের (TMC) বিরোধী তাঁদেরই তিনি স্বাগত জানাবেন। তাঁর কথায়, বামেদের জন্য তো আমরা হাত বাড়িয়েই রেখেছি। পরবর্তী যেকোনও নির্বাচনে সাগরদিঘি মডেল হতে পারে। আমরা অনুঘটকের কাজ করতে পারি, ওখানে যেমন করেছি।
[আরও পড়ুন: সত্যি হচ্ছে আশঙ্কাই! একধাক্কায় প্রায় দু’শতাংশ কমল দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার]
সাগরদিঘি উপনির্বাচনেও বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের আঁতাঁতের অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেখিয়ে খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূলকে হারাতে একজোট হচ্ছে দুই শত্রু শিবির। ভোটের আগে সেই জোটের কথা পুরোদস্তুর অস্বীকার করে গিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু এদিন অধীর কার্যত মেনে নিলেন যে সাগরদিঘিতে বিজেপির ভোটাররাও কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছেন। অর্থাৎ অভিষেকের অভিযোগেও সিলমোহর দিয়ে দিলেন অধীর।
[আরও পড়ুন: অ্যাডিনো মোকাবিলায় সব হাসপাতালকে নয়া নির্দেশিকা স্বাস্থ্যদপ্তরের, চালু হেল্পলাইন নম্বরও]
স্বাভাবিকভাবেই অধীরের মন্তব্যে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, “কংগ্রেসের ওপরতলা দেখুক। যারা শূন্য পেয়েছে তারা বলছে লোকাল জোট হলে তারা অনুঘটকের কাজ করবে। অস্তিত্বের লড়াই করতে গিয়ে শত্রুরা একজোট হচ্ছে। জগাই-মধাই গদাই একজোট হচ্ছে। নায়কের অমরিশ পুরী হতে ইচ্ছে হয়েছে অধীরের। কেন্দ্রে যে বিজেপিকে রুখতে চাইছে, সে এখানে বিজেপির দালালি করছে। বিজেপির শক্তি যেখানে আছে সেখানে কংগ্রেস বিজেপির দালালি করছে। এখন প্রার্থী নেই বলেই জোট করে হাতে হাত মেলাচ্ছে। দলের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে।”