স্টাফ রিপোর্টার: যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। কার্লেস কুয়াদ্রাতের জমানায় ইস্টবেঙ্গল ড্রেসিংরুমের সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি। কুয়াদ্রাত জমানায় লাল-হলুদ ড্রেসিংরুমের পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছিল, একটা সময় ফুটবলাররা কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কোচের উপর থেকে আস্থাই চলে গিয়েছিল। এই দলটাকে সামলাতে গিয়ে পুরো ল্যাজেগোবরে হয়ে যাচ্ছিলেন স্প্যানিশ কোচ। স্বাভাবিকভাবেই কোচ বদল ছাড়া অন্য কোনও উপায় ছিল না। অস্কার ব্রুজো এসেই যে কম সময়ে দলের সব কিছু বদলে দিয়েছেন এরকম নয়।
দায়িত্ব নিয়েই দেখতে পেয়েছিলেন, দলের প্ল্যানিংয়ে প্রচুর টেকনিক্যাল ভুল রয়েছে। কিন্তু দ্রুত তা ঠিক করা সম্ভব নয়। ফলে যেটা দ্রুত ঠিক করা সম্ভব, সেটাই করেছেন। দলের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি সরিয়ে ফুটবলারদের বিশ্বাস করতে শিখিয়েছেন, এই দলটাই পারে ম্যাচ জিততে। আর তারই ফল, প্রথম ম্যাচে ভুটানের পারো এফসির সঙ্গে ম্যাচ ড্র। পরের ম্যাচে বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়ে শেষ ম্যাচেও জয় লেবাননের নেজমেহর বিরুদ্ধে। ফলে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের (AFC Challenge League) গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছে ইস্টবেঙ্গল। আইএসএলে হারের ডবল হ্যাটট্রিক করা একটি দল যখন আত্মবিশ্বাসের শেষ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছিল, সেই সময় নতুন কোচ অস্কার ব্রুজোর হাত ধরে বিদেশের মাটিতে এএফসিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। প্রতিপক্ষ যাই হোক। তিনটে বিদেশি দলের থেকে পয়েন্ট কেড়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। সেটাও এমন একটা সময় যখন, ইস্টবেঙ্গলের উপর কেউ ভরসা রাখতে পারছে না। স্বাভাবিক ভাবেই সবাই ধরে নিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই জয় আইএসএলেও ফর্মে ফেরাবে হিজাজিদের। এদিন নেজমেহরকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সেই একই সুরে কথা বলেন কোচ ব্রুজোও। সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘দেশের লিগে আমরা ভালো অবস্থায় নেই। আশা করছি, বিদেশের মাটিতে এই সাফল্য ঘরোয়া ফুটবলেও আমাদের ভালো খেলতে সাহায্য করবে।’
ব্যর্থতার শেষ স্তরে থাকা একটা দল কীভাবে ঘুরে দাঁড়াল? এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ব্রুজো বলেন, ‘এই স্তরের ফুটবলে সাফল্য পেতে গেলে যেরকম পারফরম্যান্স করতে হয়, আমাদের ছেলেরা আজ সেরকমই খেলেছে। টানা ৯০ মিনিট ধরে সমান তালে ভালো খেলে গিয়েছে। এই সাফল্যর জন্য ছেলেদের ধন্যবাদ। ইস্টবেঙ্গলের সব সমর্থক, ক্লাব কর্তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে সত্যিই আজ আমরা খুশি।’
ক্লাবের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার এদিন ক্লাব তাঁবুতে বসে বলছিলেন, ‘ইস্টবেঙ্গল সবসময়ই বিদেশের মাটিতে ভালো খেলে। আমাদের একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে চলতে হচ্ছিল। আশা করব এই জয় দলকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করবে।’