সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শীতের মরশুমের আগেই আফগানিস্তানে বিদ্যুতের জোগান নিয়ে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। বকেয়া টাকা না মেটালে জোগান বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিদেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি। ফলে এবার সম্পত্তি বিক্রি করে সেই দেনা মেটানোর ব্যবস্থা করছে তালিবান নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানের সরকারি বিদ্যুত সংস্থা ‘দা আফগানিস্তান ব্রেশনা শেরকত’।
[আরও পড়ুন: এবার কাবুলের গুরুদ্বারে তালিবানি তাণ্ডব, ভাঙল দরজা-সিসিটিভি]
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে, পূর্ববর্তী আফগান সরকারের যে সমস্ত রাজনীতিবিদ বা আমলা বিদ্যুতের বিল মেটাননি, তাঁদের বাড়ি বিক্রি করে টাকা তুলবে আফগান বিদ্যুত সংস্থা। খামা নিউজ সূত্রে খবর, সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থাটির বর্তমান প্রধান সফিউল্লা আহমদজাই জানিয়েছেন, শীঘ্রই সমস্ত দেনা মিটিয়ে দেওয়া হবে। দেশে বিদ্যুতের জোগান নিশ্চিত করা হবে। তবে প্রশ্ন উঠছে সেই সম্পত্তি নিলাম করলে কিনবে কে? দেশটির বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে বিনিয়োগে সেই অর্থে আগ্রহ নেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির। দেশের অভিজাত গোষ্ঠীর অধিকাংশই ধনসম্পদ বিদেশে সরিয়ে ফেলেছেন। ফলে এই পদক্ষেপের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আফগানিস্তানে (Afghanistan) বিদ্যুৎ উৎপাদন ও জোগান দেওয়ার জন্য সেই অর্থে কোনও কেন্দ্রীয় পরিকাঠামো বা ‘ন্যাশনাল পাওয়ার গ্রিড’ নেই। ফলে পড়শি মধ্য এশীয় দেশগুলি থেকেই বিদ্যুৎ আমদানি করতে হয় কাবুলকে। আফগানিস্তানে জেহাদিরা ক্ষমতায় আসার পর ইস্তফা দিয়েছেন দেশের সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থার প্রধান দাউদ নুরাজি। তারপর থেকেই কার্যত থমকে রয়েছে সমস্ত প্রশাসনিক কাজ। এছাড়া, বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির বকেয়াও মেটাচ্ছে না তালিবান। ফলে শীতের মরশুমের আগে জোগান বন্ধ করে দিতে পারে তারা। দাউদ নুরাজি জানিয়েছেন, মূলত উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান থেকে দেশের প্রয়োজনের ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ আমদানি করে আফগানিস্তান। আর চলতি বছর অনাবৃষ্টির জেরে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই রাষ্ট্রসংঘের মানবতা বিষয়ক সমন্বয় দপ্তর দাবি করেছিল, দ্রুত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে চলেছে আফগানিস্তান। রাষ্ট্রসংঘের মুখপাত্র জেন্স লার্ক জেনেভায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, লক্ষ লক্ষ আফগান নাগরিক বড় সমস্যার মুখে। খাদ্য সংকটের পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার মুখে। আন্তর্জাতিক আঙিনার কাছে তাঁর আবেদন, এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে ৬০ কোটি ডলার আর্থিক মদত দেওয়া হোক।