সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাধারণতন্ত্র দিবসের হিংসার ঘটনা আন্দোলনকে দুর্বল করেছে। দেশজুড়ে কলুষিত হয়েছে আন্দোলনকারীদের ভাবমূর্তি। গান্ধীজির (Mahatma Gandhi) মৃত্যুবার্ষিকীতে তাই ফের অহিংসার পথে ফিরলেন কৃষকরা। আজ গোটা দিন তাঁরা পালন করবেন ‘সদ্ভাবনা দিবস’ হিসেবে। এদিন সকালে নিজ নিজ বিক্ষোভস্থলেই অনশনে বসেছেন কৃষক নেতারা। সকাল ৯ থেকে শুরু হওয়া এই অনশন চলবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
আসলে গত আড়াই মাস ধরে চলা কৃষক আন্দোলন (Farmers Protest) বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে সাধারণতন্ত্র দিবসে। জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে বিদ্ধ হতে হয়েছে কৃষক নেতাদের। তারপর খেই হারিয়েছিল আন্দোলন। সিঙ্ঘু, গাজিপুর ও রাজধানী দিল্লির অন্যান্য সীমান্ত থেকে ধীরে ধীরে ঘরে ফেরার পথে পা বাড়াচ্ছিলেন হতাশ আন্দোলনকারীরা। সরকারিভাবে গোটা চারেক কৃষক সংগঠন আন্দোলন প্রত্যাহারও করে নিয়েছিল। এমনকী, কৃষকদের যে সংঠনটি সবচেয়ে প্রভাবশালী সেই ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নও (Bharatiya Kisan Union) আন্দোলন প্রত্যাহার করা নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করেছিল। কিন্তু বুধবার রাতে গাজিপুর সীমান্তে বিক্ষোভকারীদের একপ্রকার জোর করে তুলে দেওয়ার ছক কষেই ভুল করে বসে উত্তরপ্রদেশ সরকার। কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইতের (Rakesh Tikait) অভিযোগে নতুন করে গতি পায় বিক্ষোভ। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ থেকে ফের হাজারো কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করেন। তারপরও হিংসার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সিঙ্ঘু সীমান্তে কৃষকদের বিরুদ্ধে পালটা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ‘স্থানীয়’রা। তাঁদের আবার দাবি, ওই বিক্ষোভ স্থল খালি করতে হবে। কৃষকদের অভিযোগ, তথাকথিত ওই স্থানীয়রা কৃষকদের বিক্ষোভস্থলে পাথরও ছুঁড়েছেন। তাই এবার সমস্ত হিংসার ঘটনা থেকে বিরত থাকতে উদ্যোগী কৃষক নেতারা। ‘সদ্ভাবনা দিবসে’ গান্ধীর আদর্শে ফিরতে চাইছেন তাঁরা। কৃষক আন্দোলনের নেতা দর্শন পাল বলছেন, “আমরা শান্তির পক্ষেই ছিলাম, আজও তাই আছি, আগামী দিনেও থাকব। আমি দেশের সমস্ত মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছি আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে শামিল হতে।’’
[আরও পড়ুন: কৃষকদের উসকানি দিয়ে দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন রাহুল! বিস্ফোরক স্মৃতি]
এদিকে গান্ধীজির মৃত্যুবার্ষিকীতে রীতিমতো লজ্জাজনকভাবে টুইটার ট্রেন্ডের শীর্ষে উঠে এল ‘নাথুরাম গডসে অমর রহে’ হ্যাশট্যাগটি (#NathuramGodseAmarRahe)। তথাকথিত হিন্দুত্ববাদীদের অনেকেই গান্ধীজির প্রয়াণ দিবসে তাঁরই হত্যাকারীর নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় গান্ধী হত্যাকেও বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। যা বিপজ্জনক প্রবণতা বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।