সুলয়া সিংহ, অযোধ্যা: কথায় বলে ভারততীর্থ! কাশ্মীরে অমরনাথ থেকে কন্যাকুমারিকার বিবেকানন্দ রক অবধি এদেশে তীর্থ ক্ষেত্রের ছড়াছড়ি। নতুন সংযোজন অযোধ্যার রামমন্দির (Ram Mandir)। স্বপ্নের মন্দির উদ্বোধনের আগেভাগে পৌঁছে গিয়েছেন দামোদরজি মহারাজও। ১৯৯২ সালে বাবরি ধ্বংস হয়। সেই থেকে খালি পায়ে সাইকেল চেপে দেশের ‘জাগ্রত’ তীর্থস্থানগুলিতে হত্যে দিতেন মানুষটা। গত ৩১ বছর ধরে একটাই ছিল প্রার্থনা- অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে যেন রামমন্দির স্থাপিত হয়। শেষ পর্যন্ত মনস্কামনা পূরণ হয়েছে। ক্লান্ত চরণ, তবু বেজায় খুশি দামোদরজি।
একাধিক গেরুয়া পতাকা, রাম ও অন্য দেবদেবীর ছবি, গীতার বাণীতে সাজানো আমেদাবাদের বাসিন্দা দামোদরজির আশ্চর্য ‘রথ’। নিজের সাইকেলটিকে ‘রথ’ বলতেই পছন্দ করেন মধ্যবয়স্ক মানুষটি। পরনে গেরুয়া ধুতি, নামাবলী কুর্তা, মাথায় গামছা। তা রথ বললে কিছু ভুল বলা হয় না। যে সাইকেল গত তিন দশক ধরে ৪১ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে, সে আডবাণীর রথের চেয়ে কম কী!
[আরও পড়ুন: ব্যাটে-বলে আগুন, আইসিসি-র বিচারে ডিসেম্বরের সেরা এই ভারতীয় ক্রিকেটার]
দামোদরজি দাবি, রামজন্মভূমিতে রামমন্দিরের কামনায় বৈষ্ণব দেবী থেকে পুরীর জগন্নাথ মন্দির, অমরনাথ থেকে কেদার-বদ্রি অবধি খালি পায়ে সাইকেল চালিয়ে পৌঁছেছেন। সমস্ত তীর্থে পুজো দিয়েছেন। ঈশ্বরের কাছে কামনা ছিল একটাই। ভক্ত হনুমানের মতো এভাবেই ঘুরতে ঘুরতে ছয় বছর আগে অযোধ্যাতেও এসেছিলেন। সেবার রামমন্দিরের আর্জিতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দেন। তাতেই কি কাজ হল?
[আরও পড়ুন: ‘আমার ব্যাটিং দেখার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন!’, টেস্ট দলে সুযোগ পেয়ে ধোনির প্রতি কৃতজ্ঞ ধ্রুব]
২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্বস্তি পান দামোদরজির মতো দেশের অসংখ্য রামভক্ত। পুরাতত্ত্ব বিভাগের রিপোর্টের ভিত্তিতে বিতর্কিত জমিতে মন্দির নির্মাণের অনুমতি দেয় আদালত। একমাত্র সাইকেল সঙ্গী ঘরছাড়া মানুষটার যাবতীয় কষ্ট দূর হয়। এর পর রামমন্দির নির্মাণ শুরু হতেই আনন্দে আত্মহারা হন তিনি। আসন্ন মন্দির উদ্বোধনের দিন অযোধ্যায় থাকবেন না, তা কী হয়! অতএব, ২২ জানুয়ারি রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা দিবসে উপস্থিত থাকার সংকল্প নিয়ে গত ২ ডিসেম্বর ফের সাইকেল চেপে বেরিয়ে পড়েন দামোদরজি। ৩২ দিন সাইকেল চালিয়ে পৌঁছে যান অযোধ্যা নগরীতে। তথাপি ভিভিআইপিদের ভিড়ে ভক্ত ও ভগবানের দেখা হবে না ২২ জানুয়ারি। পরদিন ২৩-এ দর্শন করবেন দামোদরজি। তার পরেই ভাঙবেন দীর্ঘ তিন দশকের ব্রত। পায়ে জুতো গলাবেন তিনি।