দুলাল দে: ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ভবিষ্যৎ ঠিক কোন রাস্তায় যাবে, তা জানার জন্য সবাই তাকিয়ে আছেন ৫ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের শুনানির দিকে। নির্বাচন জনিত সংবিধান তৈরি করে আদালতের তরফে খসড়া পাঠানো হয়েছিল ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের (AIFF) কাছে। ভারতীয় ফুটবলের অংশীদারীত্ব রয়েছে বলে আদালত প্রেরিত সংবিধানের খসড়ায় কিছু আপত্তি আগেই জানিয়েছে এফএসডিএল (FSDL)। কিন্তু খোদ ফেডারেশনের তরফে আদালতের ঠিক করে দেওয়া সংবিধানে কোনও আপত্তির কথা এখনও পর্যন্ত জানানো হয়নি। তবে নতুন সংবিধান নিয়ে চূড়ান্ত মতামত জানানোর জন্য কিছুদিন সময় চেয়েছে ফেডারেশন। সেই কারণেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ৫ এপ্রিলের মধ্যে সংবিধানের খসড়া নিয়ে ফেডারেশনের চূড়ান্ত মতামত জানাতে হবে। মানে, যদি কোনও পয়েন্টে আপত্তি থাকে তা জানাতে পারে ফেডারেশন। এফএসডিএলের আপত্তির জায়গাগুলি আগেই জানা গিয়েছে। এবার ফেডারেশনের আপত্তির পয়েন্টগুলি জানা গেলে তারপর চূড়ান্ত সংবিধান জানিয়ে নির্বাচনের দিন ঘোষণা করবে সুপ্রিম কোর্ট।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে দুই আদালত বান্ধব গোপাল শঙ্করনারায়ণ এবং সমর বনশল জানান, আদালতের নির্দেশে যে ২০২২-এর সেপ্টেম্বরে যে নির্বাচন হয়েছিল, তা ফিফার (FIFA) নির্বাসন তোলার জন্য জরুরি ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী নির্বাচন ছিল। যদিও ফেডারেশন কর্তারা বলছেন, নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর ফিফার থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই কমিটি চার বছর থাকতে পারে। তবে আদালত মনে করছে, সেটা জরুরি ভিত্তিতে তিন মাসের জন্য অন্তবর্তী নির্বাচন করা হয়েছিল। কারণ, তখনই বলা হয়েছিল, নতুন সংবিধান তৈরি করে ফের নির্বাচন করতে হবে। তারপর থেকেই নতুন সংবিধান তৈরির কাজ চলছে। আর তাতে সংবিধানের যে খসড়া তৈরি হয়েছে, তাতে নতুন করে ২৩টি ভোট বাড়ছে। যেখানে ফুটবলারদের পাশাপাশি কোচেদের ভোটও রয়েছে।
[আরও পড়ুন: শান্তনু গাঁজাখোর, ভোট দেবেন না! কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বেনজির আক্রমণ দলেরই বিধায়কের, ভাইরাল অডিও]
আগে ফেডারেশনের নতুন কমিটি নির্বচিত হত শুধুমাত্র রাজ্য সংস্থাগুলির ভোটে। প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সীর সময়ে রাজ্য সংস্থাগুলির পাশাপাশি মহিলা ফুটবল সংস্থার ভোটও ছিল। কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে ঠিক হয়, ৩৫টি রাজ্য ফুটবল সংস্থা ফেডারেশনের নির্বাচনে ভোট দিতে পারবে। তবে সংবিধানের নতুন খসড়া অনুযায়ী শুধুমাত্র ৩৫টি রাজ্য সংস্থার ভোটের উপরেই নতুন কমিটি গঠিত হবে না। সঙ্গে আরও ২৩টি ভোট বেড়ে যাবে।
খসড়া অনুযায়ী নতুন করে নির্বাচন হলে ভোট দিতে পারবেন ১৫ জন জাতীয় ফুটবলার। এক্ষেত্রে দেখা হবে দেশের হয়ে কোন ১৫ জন ফুটবলার সর্বাধিক সংখ্যক ম্যাচ খেলেছেন। তঁারাই ফেডারেশনের নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। গতবারও আদালতের তরফে জানানো হয়েছিল, ফুটবলারদের ভোট থাকবে।
কিন্তু ফিফা ফুটবলারদের ভোট অনুমোদন করে না বলে শেষ মুহূর্তে শুধু রাজ্য সংস্থার ভোট নিয়েই নির্বাচন হয়েছিল। তবে সবটাই হয়েছিল জরুরি ভিত্তিতে। এবার তাই অনেক আগের থেকেই সংবিধানের খসড়ায় ফুটবলারদের ভোট থাকছে। ভোট দিতে পারবেন কোচরাও। এক্ষেত্রে নতুন সংবিধানে দেখা যাচ্ছে, দু’জন কোচ ভোট দিতে পারবেন। একজন পুরুষ এবং অপরজন মহিলা কোচ। কোচেস অ্যাসোসিয়েশন এক্ষেত্রে ঠিক করে দেবে, কোন দু’জন কোচ ভোট দিতে পারবেন ফেডারেশন নির্বাচনে।
[আরও পড়ুন: আচমকা বুকে ব্যথা, হাসপাতালে ভর্তি সব্যসাচী চক্রবর্তী]
ভোট দেওয়ার অধিকার থাকবে রেফারিদেরও। এক্ষেত্রেও রেফারি অ্যাসোসিয়েশন ঠিক করে দেবে কোনও দু’জন রেফারি ভোট দিতে পারবেন। এখানেও একজন পুরুষ রেফারি। একজন মহিলা রেফারি।
সবচেয়ে যেটা উল্লেখযোগ্য ব্যপার, এবার ফেডারেশনের নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে আইএসএল এবং আই লিগের ক্লাবরাও। আইএসএলের তিনটি ক্লাব ভোট দিতে পারবে। আর আই লিগ থেকে ভোট দিতে পারবে মাত্র ১টি ক্লাব। আইএসএলের ক্লাবগুলি আলোচনায় বসে ঠিক করবে, কোন তিনটি ক্লাব ফেডারেশনের নির্বাচনে ভোট দেবে। সেরকম আই লিগের ক্লাবগুলিও ঠিক করে দেবে, তাদের মধ্যে কোন ক্লাবটি ফেডারেশনের নির্বাচনে ভোট দেবে। সবমিলিয়ে যা পরিস্থিতি, তাতে সবাই তাকিয়ে এখন আদালতের দিকে।