shono
Advertisement

প্রায় দৃষ্টিহীন বেকেনবাওয়ার, বাড়িতে বসেই মুলারদের জয় চাইছেন জার্মান কিংবদন্তি

Posted: 01:30 PM Nov 27, 2022Updated: 01:30 PM Nov 27, 2022

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বকাপ (Qatar World Cup) ফুটবলের ভরা বাজারে দুঃসংবাদ ফুটবলপ্রেমীদের জন‌্য। গুরুতর অসুস্থ ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার (Franz Beckenbauer)। ক্রমশ অন্ধত্বের দিকে এগোচ্ছেন বিশ্ব ফুটবলের কিংবদন্তি। এই মুহূর্তে ডান চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। অন‌্য চোখেও আঁধার নামবে যে কোনওদিন। শুধু তাই নয়, যে কোনও সময় হৃদরোগের আশঙ্কাও রয়েছে তাঁর। গুরুতর এই শারীরিক অসুস্থতার কারণে কাতারে যাননি জার্মান ফুটবলের সর্বকালের অন‌্যতম সেরা তারকা। ১৯৬৬-র পর এই প্রথম। যে কারণে অন‌্যবারের মতো কোনও টিভি চ‌্যানেলের পর্দায় বা দর্শকাসনে দেখা যাচ্ছে না তাঁকে। পরবর্তীতে যাওয়ার সম্ভাবনাও যে নেই, তা-ও এক জার্মান পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করে দিয়েছেন বেকেনবাওয়ার।

Advertisement

কোচ ও ফুটবলার হিসাবে বিশ্বকাপ জেতার বিরল কৃতিত্বের অধিকারী বেকেনবাওয়ারকে ছাড়া আধুনিক জার্মান ফুটবল ভাবা সম্ভব নয়। দায়িত্বে থাকুন বা না থাকুন, সমস‌্যায় পড়লে বিশ্বকাপে জার্মান দলের কোচ-ফুটবলাদের তাঁর দ্বারস্থ হতে দেখা গিয়েছে বারবার। সেই বেকেনবাওয়ার এখন বসে আছেন অস্ট্রিয়ার সলজবুর্গে তাঁর সবুজ ঘাসজমি ও গাছপালায় ঢাকা বাড়ির অন্তরালে। দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না ৭৭ বছরের ফুটবল কিংবদন্তিকে। বিশ্বজগৎ থেকে এভাবে সরে থাকার কারণ যে একান্তই শারীরিক, তা সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করেছেন বেকেনবাওয়ার। কাতারে দেশের হয়ে কাপ জেতার লড়াইয়ে নামা জার্মান দল, স্ট্র‌্যাটেজি থেকে প্রস্তুতি সব নিয়ে জার্মান কোচ হ‌্যান্সি ফ্লিক পরামর্শ পেয়েছেন তাঁর কাছ থেকে। তারপরেও কাতারে গ‌্যালারিতে অনুপস্থিত তিনি। ‘‘দেশের বিশ্বকাপ জয় দেখতে কাতার যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পারলাম না! শরীর দিল না। তাই জার্মানির জন‌্য প্রার্থনা করে চলেছি টিভির সামনে’’ বলেছেন জার্মান কিংবদন্তি।

[আরও পড়ুন: বৃষ্টির জন্য বাতিল ভারত-নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ওয়ানডে, তবু বিতর্কে টিম ইন্ডিয়া]

ঠিক কী হয়েছে বেকেনবাওয়ারের? সাক্ষাৎকারে যা জানিয়েছেন, তাতে ক্রমশ অন্ধত্বের দিকে এগোচ্ছেন তিনি। আপাতত ডান চোখে একদম দেখতে পাচ্ছেন না। ‘‘চিকিৎসকরা বলছেন, আমার একচোখে ‘ইনফার্কশন’ হয়েছে। আপাতত ডানদিকের চোখটা পুরো গিয়েছে। কিচ্ছু দেখতে পারছি না।’’ ফুটবল মাঠে ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার মানে সিংহ-বিক্রম। অকুতভয় যোদ্ধা। বেকেনবাওয়ার মানে ১৯৬৬ বিশ্বকাপে পেলে-ববি মুর-জিওফ হার্স্টদের মহাতারকাদের মাঝে এক একুশ বছরের তরুণের দাপাদাপি। বেকেনবাওয়ার মানে ১৯৭০-এর সেমিফাইনালে ইতালির বিরুদ্ধে ডান কাঁধের হাড় সরে যাওয়ার পরও ভাঙা হাত স্লিং-য়ে ঝুলিয়ে অবিশ্বাস‌্য লড়াই। বেকেনবাওয়ার মানে ১৯৭৪-এ জোহান ক্রুয়েফের অপ্রতিরোধ‌্য হল‌্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জেতার মহাকাব‌্য।

বিশ্ব ফুটবলের সেই অজেয় মহাবীর আজ ক্রমশ দৃষ্টিহীন,চলৎশক্তিহীন। তাঁর যে অসুস্থতা, তাতে চিকিৎসাশাস্ত্র অনুযায়ী, যে কোনও সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তা জেনেও নির্বিকার তিনি। হেসে বলেছেন, ‘‘এক চোখে দেখতে পাচ্ছি না। কিন্তু সেটা ম‌্যানেজ করে নিচ্ছি। হৃদপিন্ড নিয়েও সতর্ক রয়েছি। চিরকাল বাঁচব না জানি। কিন্তু হারার আগে হারব কেন?’’ চোখের জন‌্য এখন খুব একটা ফুটবল ম‌্যাচ দেখেন না বেকেনবাওয়ার। বরং নিজের ‘ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার ফাউন্ডেশন’ নিয়ে বেশি ব‌্যস্ত। ইতিমধ্যে এই সংগঠনের হয়ে ৩০ মিলিয়ন ডলার তুলেছেন অসুস্থদের সাহায‌্য করার জন‌্য। ‘‘আমার সঙ্গে আমার বউ হেইডিও পরিচালন বোর্ডে আছে। ও অনেকটাই সাহায‌্য করে। আমি একদিন থাকব না। কিন্তু আমার এই ফাউন্ডেশনটা থাকবে মানুষের পাশে। এই মনে করেই অপার তৃপ্তি পাই,’’ বলছেন বেকেনবাওয়ার। বলছেন, ‘‘রোজ অসংখ‌্য মেল পাই সমর্থকদের। ওঁরা ভাবছেন, ফ্রাঞ্জ হয়তো বেশি দিন আর নেই। আমি ওঁদের আশ্বস্ত করে বলেছি- ভেবো না ব্রাদার! চেষ্টা করছি আরও কিছুদিন তোমাদের সঙ্গে থাকতে।’’ থাকবেন। থাকতে হবেও। ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার যে এক অদম‌্য লড়াইয়েরও নাম!

[আরও পড়ুন:আজ তিকিতাকা বনাম ‘টিকে থাকা’! ফাইনাল ভেবে নামছে জার্মানি, ফুরফুরে স্পেন]

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement