সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুপ্রিম রায় সত্বেও নতুন অধ্যাদেশের বলে পদস্থ আমলাদের বদলির অধিকার এখন কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। ফের ‘সর্বশক্তিমান’ দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর। এই অবস্থায় আমলা নিয়ন্ত্রণ ফেরাতে সমর্থন জোগাড়ে দোরে দোরে ঘুরছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal)। দেখা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যেয়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গেও। এক্ষেত্রে সমর্থনের বার্তা দিয়েছেন মমতা। শিবসেনার উদ্ধব শিবিরও সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আপকে। কংগ্রেস (Congress) একই কথা বললেও দলের অন্দরে রয়েছে দ্বন্দ্ব। তা প্রকাশ্যে গেল কংগ্রেস নেতা অজয় মাকানের (Ajay Maken) টুইটে। অজয়ের দাবি, কেজরিকে সমর্থন দেশের প্রশাসন এবং সংবিধানের বিরোধিতার সমতুল্য হবে। এমনকী তা নেহরু, আম্বেদকরদের মতো দেশনেতাদের প্রজ্ঞার বিপক্ষে যাবে।
গত শুক্রবার রাতে The Government of CNCT of Delhi (Amendment) ordinance শীর্ষক একটি অধ্যাদেশ আনে কেন্দ্র। গঠন করা হয় ‘ন্যাশনাল ক্যাপিটাল সিভিল সার্ভিসেস অথরিটি’। ন্যাশনাল ক্যাপিটাল টেরিটরি অফ দিল্লি অ্যাক্ট, ১৯৯১-কে সংশোধন করে এই অধ্যাদেশ এনেছে মোদি সরকার। ফলে সুপ্রিম রায় বাতিল হয়ে ফের একবার দিল্লির আমলাদের বদলির ক্ষমতা চলে গেছে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। অধ্যাদেশটিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, দিল্লি প্রশাসনে কর্মরত গ্রুপ-এ আমলাদের বদলি তথা নতুন পোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে শেষ কথা বলবেন উপরাজ্যপালই।
[আরও পড়ুন: হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট অতীত! ৪ মাস বাদে ফের বিশ্বসেরা ধনকুবেরদের তালিকায় আদানি]
এই অধ্যাদেশেরই বিরোধিতায় সরব হয়েছেন কেজরি। কলকাতায় এসে তিনি বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করে বলেন, “সরকার চালানোর নামে ‘তামাশা’ চলছে। ওরা দেশের বিচারব্যবস্থাকেও মানছে না। দিল্লিবাসী ৮ বছর যে জিনিসটার জন্য লড়াই করছে। সেটা ওরা এক সপ্তাহে অর্ডিন্যান্স এনে বন্ধ করে দিল।” ইতিমধ্যেই কংগ্রেস আপকে সমর্থন করার বার্তা দিয়েছে। সব ঠিক থাকলে দীর্ঘদিন বাদে রাজ্যসভায় বিরোধীদের একত্রে দেখা যেতে পারে। সংখ্যার বিচারে নয়া অধ্যাদেশ পাশ আটকাতেও পারে। কিন্তু কংগ্রেসের বেশ কিছু নেতা আপকে সমর্থন নিয়ে বেসুরো। তাঁদেরই অন্যতম অজয় মাকান।
[আরও পড়ুন: PFI-এর যম, বিব্রত করেছিলেন কংগ্রেস নেতাদের, নয়া CBI প্রধান এই কারণেই মোদির পছন্দের?]
বুধবার অজিত টুইট করেছেন, “প্রথমত কেজরিওয়ালকে সমর্থন করে আমরা অসংখ্য সম্মানিত নেতার সিদ্ধান্ত ও প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে যাচ্ছি। এর মধ্যে রয়েছে ২১ অক্টোবর ১৯৪৭ বাবা সাহেব আম্বেদকর, ১৯৫১ পণ্ডিত নেহরু এবং সর্দার প্যাটেল, ১৯৫৬ পণ্ডিত নেহরুর আরও একটি সিদ্ধান্ত। লাল বাহাদুর শাস্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে ১৯৬৪ সালের এবং ১০৬৫ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সিদ্ধান্ত। এছাড়াও নরসিমা রাওয়ের ১৯৯১ সালে সিদ্ধান্ত।” অজয় যোগ করেন, কেজরিওয়াল যে ক্ষমতা দখলে মরিয়া দিল্লির বিগত মুখ্যমন্ত্রী শিলা দিক্ষিত, মদন লাল খুরানা, সাহেব সিং ভার্মা এবং সুষমা স্বরাজদের তা ছিল না। কংগ্রেস নেতা আরও মনে করিয়ে দেন, বিজেপির সঙ্গে দল বেঁধে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর ভারতরত্ন প্রত্যাহারের দাবি তুলেছিল কেজরিওয়াল। সাম্প্রতিক কর্ণাটকে ভোটে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছিল আপ। যাতে আখেরে লাভ হয়েছিল বিজেপির। সেই নেতা এবং তাঁর দলকে কংগ্রেসের কখনই সমর্থন করা উচিত না।