সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধ আবহেই রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আঞ্চলিক-আন্তর্জাতিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে। দুই 'বন্ধু' ধরা দেন বেশ খোশমেজাজে। কিন্তু এই মোদি-পুতিন সখ্য মোটেই ভালোভাবে নেয়নি আমেরিকা। মোদির এই সফরের নাকি বেজায় ক্ষুব্ধ ওয়াশিংটন। এখন প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কী দূরত্ব বাড়ছে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে? এই পরিস্থিতিতে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে কথা বললেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সংঘাতে জড়িয়েছে আমেরিকা ও রাশিয়া। এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই অত্যাধুনিক হাতিয়ার দিয়ে কিয়েভকে সাহায্য করছে ওয়াশিংটন। যা নিয়ে রেগে লাল মস্কো। একাধিকবার আমেরিকা-সহ পশ্চিমা বিশ্বকে পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুতিন। এই আহবেই গত সোমবার রুশ সফরে যান মোদি। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ আমেরিকা! ফলে এই সফরকে কেন্দ্র করে আগামিদিনে দিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্ক কোনদিকে মোড় নেয় তা নিয়ে নানা জল্পনা চলছে কূটনৈতিক মহলে। এই পরিস্থিতিতে, গতকাল, অর্থাৎ শুক্রবার সুলিভানকে ফোন করেন ভারতের 'সুপার স্পাই' ডোভাল। এনিয়ে বিদেশমন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানায়, দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, আন্তর্জাতিক নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা হয়েছে দুজনের মধ্যে।
বিবৃতিতে বলা হয়, 'ভারত ও আমেরিকার মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতা রয়েছে। যা খুবই মজবুত। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে, স্থিতিশীলতা আনতে ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এই দুদেশের সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।' প্রসঙ্গত, মোদির সফরের মাঝেই আমেরিকার বার্তা দিয়ে বলেছিল, “ভারতের কাছে আমাদের অনুরোধ, তারা যেন রাশিয়াকে স্পষ্ট করে বলে দেয় যে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান রাষ্ট্রসংঘের সনদ মেনে হওয়া উচিত যাতে ইউক্রেনের অখণ্ডতা বজায় থাকে। রাশিয়ার সঙ্গে যেসমস্ত দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, প্রত্যেকের কাছেই আমরা একই অনুরোধ করি।” এদিকে, পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ফের একবার ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে মোদি বলেছিলেন, আলোচনা ও কূটনৈতিক বৈঠকের মাধ্যমেই দুদেশকে শান্তির পথ খুঁজতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাশিয়া সফর নিয়ে আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে যে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তা সামাল দিতেই আসরে নেমেছেন অজিত ডোভাল। জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে আলোচনায় হয়তো তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। মস্কোর সঙ্গে দিল্লির মজবুত বন্ধুত্বের কথা অজানা নয় আমেরিকার। তাই তারা চেয়েছিল, পুতিনের সঙ্গে কথা বলে মোদি এই রক্তক্ষয়ী সংঘাত থামানোর উপায় বের করুন। ফলে রাশিয়ার মাটি থেকে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে নমো কী বার্তা দেন সেদিকেই নজর ছিল আমেরিকার।