সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আলিপুর সংশোধনাগারের জেল মিউজিয়ামের ক্যাফেটেরিয়ার মেনু নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। মেনুতে কেন বিপ্লবী, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে, তা নিয়ে রীতিমতো ক্ষেপে গিয়েছিলেন বিদ্বজ্জনরা। নেটিজেনরা তো রীতিমতো কোমর বেঁধে নেমে পড়েছিল বিতর্কের আগুনে বারুদ ঢালতে। সেই বিতর্কের জেরেই রাতারাতি বদলে গেল মেনুর নাম। দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিপ্লবীদের নামের জায়গায় এল সংখ্য়া। বিনয়-বাদল-দীনেশ প্ল্যাটারের নাম হয়ে গেল প্ল্য়াটার ওয়ান, প্ল্যাটার টু, প্ল্যাটার থ্রি! আপাতত, শোরগোল থামাতে নম্বরকেই ঢাল বানাল কর্তৃপক্ষ।
ঠিক কী ঘটেছিল?
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্কের নজরে পড়ে আলিপুর জেলের এই মেনু কাণ্ড। বিষয়টি নিয়ে বিশদে জানতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল আলিপুর জেল মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও। তবে তাঁদের থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
তবে এই বিতর্ক নিয়ে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্কের কাছে মুখ খুলেছেন শহরের বিদ্বজ্জনরা। সংবাদ প্রতিদিন ডট ইনের তরফে যোগাযোগ করা হয় ইতিহাসবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর সঙ্গে। বিষয়টি শুনে তাঁর প্রথম প্রতিক্রিয়া, “ব্যাপারটা ভাল হচ্ছে না। যেসব বিপ্লবী, যাদের আমরা অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেখি, যাঁরা স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের নামে খাবার কিংবা খাবারের উপাদানের নামকরণ করা, এটা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু। ব্যাপারটা মানতে পারছি না। এটা ঠিক নয়।” তাঁর কথায়, ‘খাবারের নাম বদল হওয়াই উচিত’।
[আরও পড়ুন: চায়ের সঙ্গে ওল্ড মঙ্ক! যুবকের অভিনব রেসিপি মন মাতাবে সুরাপ্রেমীদের, দেখুন ভিডিও]
শুধু তিনি নন, একই মত সাহিত্যিক বিনোদ ঘোষালেরও। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিনোদবাবু বলেন, “ইংরেজরা এই নাম রাখলে ঠিক থাকত, কারণ ওরা তো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের খেয়ে বসেছিল। কিন্তু স্বাধীন ভারতে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামে খাবারের নাম মেনে নেওয়া যায় না। এর চেয়ে নির্বুদ্ধিতা, হাস্যকর, দুঃখজনক ঘটনা আর হয় না। এমন উদাসীনতা সত্যিই মানা যায় না। আমার খুব অসহায় লাগছে এটা ভেবে যে, বাঙালি আজ নিজের গালে নিজে থাপ্পড় মারছে।”
তবে এই বিষয়টিতে বিস্ময়ের কিছু দেখছেন না কার্টুনিস্ট সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “স্বাধীনতার ৭৫ বছরে চারদিকে যা হচ্ছে, তাতে এই ঘটনা অবাক করছে না আমাকে। চারদিকে তো এমনই ঘটনার ছড়াছড়ি। এটা সেই তালিকায় নতুন সংযোজন মাত্র।” বিতর্ক আরও বেড়ে যাওয়ার আগে টনক যে নড়েছে কর্তৃপক্ষের, তা জেনে আপাতত খুশি নেটিজেনরা। খুশি বিদ্বজ্জনরাও।