সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রণকৌশল বদলাচ্ছে ইউক্রেন। প্রায় ২ বছর ধরে চলতে থাকা যুদ্ধে সম্প্রতি ইউক্রেনের অভ্যন্তরে নানান জায়গায় ড্রোন হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। যদিও যুদ্ধে দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি ছিল না ইউক্রেনের। রাশিয়ার লাগাতার হামলার পর এবার সে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে চলেছে ন্যাটো। ফলে বদলে যেতে চলেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ঝাঁজ। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর রাশিয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়চ্ছে ইউক্রেনের দূরপাল্লার ক্রুজ মিসাইল স্ট্রোম স্যাডো।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ একাধিক ন্যাটো অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির দৌলতে বর্তমানে দূরপাল্লার মিসাইলের ভাণ্ডার রয়েছে ইউক্রেনের কাছে। যদিও তা ব্যবহারের অনুমতি ছিল শুধুমাত্র দেশের অন্দরে অনুপ্রবেশ করা রুশ সেনার উপর। দীর্ঘ দিন ধরে এই নিষেধাজ্ঞা তোলার দাবি জানিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। যাতে রাশিয়ার উপর চাপ বাড়ানো যায়। সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার এবার প্রচারের আলোয় চলে এসেছে ব্রিটেনের তৈরি ক্রুজ মিসাইল স্ট্রোম স্যাডো। জানা যাচ্ছে, ২৫০ কিলোমিটার দুরত্বে নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র। ৫.১০ মিটার লম্বা এই ক্ষেপণাস্ত্রের ওজন ১৩০০ কিলোগ্রাম। এর বিশেষক্ষমতা হল, দিন হোক বা রাত, যে কোনও আবহাওয়ায় এটি হামলা চালাতে সক্ষম।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই মিসাইল ইউক্রেনকে দিয়েছিল ব্রিটেন ও ফ্রান্স। যদিও শর্ত দেওয়া হয় নিজেদের সীমার বাইরে এর ব্যবহার করা যাবে না। স্ট্রোম স্যাডো মিসাইল ফাইটার বিমান থেকে নিক্ষেপ করা যায়। নিক্ষিপ্ত হওয়ার পর শব্দের গতিতে ছুটে হামলা চালায় লক্ষ্য বস্তুতে। এর মারণ ক্ষমতা ভয়ংকর। মূলত শত্রুপক্ষের বাঙ্কার, গোলাবারুদের ভাণ্ডার ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয় এই ক্ষেপণাস্ত্র। ১৯৯৪ সালে 'মাত্রা' ও 'ব্রিটিশ অ্যারোস্পেস' তৈরি করে এই মারণাস্ত্র। 'স্ট্রোম স্যাডো' ব্রিটেনের দেওয়া নাম, ফ্রান্স এটিকে বলে 'স্ক্যাল্প-ইজি' (SCALP-EG)। জানা যাচ্ছে, এই মিসাইলের এক একটির দাম ১ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ৬.৫ কোটি। শত্রুর এয়ারবেস, রাডার ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে এর জুড়ি মেলা ভার। সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের অস্ত্র ভাণ্ডার ও বিদ্যুৎক্ষেত্রকে নিশানা করতে এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রই ব্যবহার করেছে রাশিয়া।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি অনুযায়ী, যুদ্ধের বর্তমান যা পরিস্থিতি তাতে ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী বেশকিছু শহর এখন রাশিয়ার দখলে। আর সেখানে বসেই বেছে বেছে ইউক্রেনের সেনা ঘাঁটি, হাসপাতাল, বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেন। এই পরিস্থিতিতে স্ট্রোম স্যাডো ইউক্রেনের ভেতরে থাকা রুশ ঘাঁটির পাশাপাশি রাশিয়ার ভিতরেও আঘাত হানতে পারবে। ইউক্রেন আগেই অভিযোগ করেছিল, যুদ্ধে নেমে দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আসলে যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনর হাত-পা বেঁধে দেওয়ার সামিল।