সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিগৃহীতার অভিযোগ গৃহীত হয়েছিল বৃহস্পতিবার। অবশেষে সিবিআই হেফাজতে যেতেই হল উন্নাও গণধর্ষণের মুখ্য অভিযুক্ত বিজেপির কুলদীপ সিং সেনেগারকে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪ টে নাগাদ ইন্দিরানগরের বাড়ি থেকে আটক করা হয়। তবে এলাহাবাদ হাই কোর্টের নির্দেশ, আটক নয়, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে হবে।
‘আমি কুলদীপ ও তাঁর ভাই অতুলের মৃত্যুদণ্ড চাই’। অভিযুক্ত বিজেপি নেতাকে আটকের পর সিবিআই আধিকারিকদের স্পষ্ট জানালেন নির্যাতিতার মা। বললেন, তাঁর স্বামীকে আর ফিরে পাবেন না। তাই এর শেষ দেখবেন তিনি। নির্যাতিতার সঙ্গে হোটেলে দেখা করেন সিবিআই আধিকারিকরা। তিনি বলেন, প্রাণ হারালেও লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনিও। তাঁর কথায়, “যাঁকে ভাইয়া বলে ডাকতাম। আমার দিদার সঙ্গে বসে গল্প করতেন তিনি। বলতেন, একটা ডিম ভেজে দাও। সেই লোকটিই আমার বাবার খুনের জন্য দায়ী। সেই লোকটিই ধর্ষণ করেছে আমাকে।” সিবিআই ডাকলে নারকো টেস্টের জন্য তিনি রাজি, এমনটাও জোর গলায় বলেন নির্যাতিতা।
[ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারের বাবা কিনা তস্কর গ্যাংয়ের ‘বস’!]
অভিযোগ, ২০১৭-র জুনে কুলদীপ সিং সেনেগার তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। এই ঘটনার পর নির্যাতিতা-সহ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল গোটা পরিবার। কিছুতেই ওই বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা যাচ্ছেল না। কারণ গোটা গ্রামের প্রশাসনিক ও পঞ্চায়েত পর্যায়ের মাথারা অভিযুক্তেরই পরিবারের সদস্য। পুলিশও হাতগুটিয়ে বসেছিল। গত রবিবার আর মানসিক যন্ত্রণা সইতে না পেরে যোগী আদিত্যনাথের বাসভবনের সামনেই সপরিবারে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন নির্যাতিতা। সেইমতো সেখানে উপস্থিত হওয়ার পরই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ তাঁদের বিরত করে হেফাজতে নেয়। এরপর পুলিশি হেফাজতেই রহস্যময়ভাবে মৃত্যু হয় নির্যাতিতার বাবার। অভিযোগ, বিধায়ক কুলদীপ সিং সেনেগারের লোকজনই নির্যাতিতার বাবাকে খুন করেছে। এরপরই রাজ্যরাজনীতিতে সমালোচিত হতে শুরু করে শাসকদল। ভাবমূর্তি রক্ষার্থে নির্যাতিতার অভিযোগ গ্রহণ করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত শুরু হয়েছিল। শেষমেশ আটক করা হল অভিযুক্তকে।
এদিকে সেনেগারকে এদিন তাঁর বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে সিবিআইয়ের লখনউ অফিস হজরতগঞ্জে নিয়ে জেরা করা হয়। তবে তাতেও একটুও দমে যাননি সেঙ্গার। তাঁর দাবি, স্বেচ্ছায় নাকি দেখা করতে এসেছেন সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে। তিনি দোষী নন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে তাঁকে। এদিন কুলদীপকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার পর সিবিআই তাঁর নামে তিনটি আলাদা মামলা রুজু করেছে। সংস্থার অপর একটি দল মাক্ষী পুলিশ স্টেশনের এক পুলিশ আধিকারিককেও গ্রেপ্তার করেছে বলে খবর।
এদিন সিবিআইয়ের বিশেষ দলের সদস্যরা নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেন। নির্যাতিতার আত্মীয় বলেন, ধর্ষণে অভিযুক্ত প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করতে হবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে তাঁদের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন নির্যাতিতার কাকা। জিজ্ঞাসাবাদের সময় সিবিআই ওই বিজেপি বিধায়কের কাছে ফাঁস হওয়া অডিও টেপটির বিষয়ে জানতে চায়। অডিওটিতে নির্যাতিতার কাকার সঙ্গে বিধায়কের কথা হয়। এদিন উন্নাও ধর্ষণ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেন, অপরাধীরা শাস্তি পাবেই।
[‘ধর্ষকদের আড়াল করতে জাতীয় পতাকা! এটা কি দেশদ্রোহিতা নয়?’]
The post উন্নাও কাণ্ডে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ককে আটক নয়, গ্রেপ্তারির নির্দেশ দিল হাই কোর্ট appeared first on Sangbad Pratidin.