সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাভ জেহাদ (Love jihad) বিতর্কে সরগরম দেশ। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানার মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যে ভিনধর্মে বিয়ে সংক্রান্ত কঠোর নিয়ম আনার কথা শোনা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে একেবারে অন্যরকম এক রায় দিল এলাহাবাদ হাই কোর্ট (Allahabad High Court)। বছরখানেক আগে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) এক মুসলিম যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় এক হিন্দু তরুণীর। মেয়েটির বাবা ওই যুবকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিলেন। মঙ্গলবার তা বাতিল করে দিল আদালত।
এদিন আদালতের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, কারও ব্যক্তিগত সম্পর্কে হস্তক্ষেপ করা মানে দু’জনের নিজস্ব পছন্দের স্বাধীনতাকে লঙ্ঘন করা। উত্তরপ্রদেশের কুশীনগরের বাসিন্দা সালামত আনসারির সঙ্গে প্রিয়াঙ্কা খারওয়ারের বিয়ে হয়েছিল গত বছরের আগস্টে। বিয়ের আগে ধর্মান্তরিত হন প্রিয়াঙ্কা। এদিন হাই কোর্ট তাঁদের সম্পর্কে জানিয়েছে, ‘‘আমরা প্রিয়াঙ্কা খারওয়ার ও সালামত আনসারিকে হিন্দু, মুসলিম হিসেবে দেখছি না।’’ দুই সদস্যের বেঞ্চের মতে, তাঁরা দু’জনে নিজেদের ইচ্ছেয় বিয়ে করেছেন। এক বছরের বেশি সময় ধরে শান্তিপূর্ণ ভাবে সুখী দাম্পত্য জীবনও কাটিয়ে ফেলেছেন। এই পরিস্থিতিতে আদালত ভারতীয় সংবিধানের ২১ নম্বর ধারা অনুযায়ী কারও জীবন ও স্বাধীনতার অধিকার রক্ষা করতে দায়বদ্ধ।
[আরও পড়ুন : ‘বড় বিনিয়োগের হটস্পট হবে ভারত, ধাক্কা সত্বেও চলবে আর্থিক সংস্কার’, ঘোষণা নির্মলার]
প্রিয়াঙ্কার অভিভাবকদের অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছেন সালামত। পাশাপাশি তাঁদের মেয়ে বিয়ের সময় নাবালিকা ছিলেন বলেও দাবি তাঁদের। তাঁরা পকসো আইনেও মামলা করেছেন। কিন্তু আদালত সেই অভিযোগ উড়িয়ে জানিয়েছে, বিয়ের সময় প্রিয়াঙ্কা প্রাপ্তবয়স্কই ছিলেন। হাই কোর্ট তার রায়ে জানিয়েছে, কোনও ব্যক্তি তিনি যে ধর্মেরই হোন না কেন, নিজের খুশিমতো জীবনযাপনের অধিকার রয়েছে তাঁর। সকলেরই ব্যক্তিস্বাধীনতা আছে।
প্রসঙ্গত, হরিয়ানার বল্লভগড়ে ধর্ম বদলে রাজি না হওয়ায় প্রকাশ্যে এক যুবতীকে গুলি করে খুন করার অভিযোগ ওঠে এক যুবকের বিরুদ্ধে। তারপরই দেশজুড়ে লাভ জেহাদ নিয়ে শুরু হয় জোর বিতর্ক। একের পর এক বিজেপি শাসিত রাজ্য লাভ জেহাদের বিরুদ্ধে আইন আনার কথা জানাচ্ছে। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টার দাবি করেছেন, লাভ জেহাদের বিষয়ে আইন আনার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করছে কেন্দ্রও। সম্প্রতি এলাহাবাদ হাই কোর্ট এক রায়ে জানিয়েছিল, স্রেফ বিয়ের জন্য ধর্মান্তকরণ গ্রহণযোগ্য নয়।