অর্ণব আইট ও নিরুফা খাতুন: আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় মৃত যুবকের দেহে আঘাতের চিহ্ন নেই। অশোক সিংয়ের মৃত্যু একেবারে স্বাভাবিক। আগে থেকেই রোগে ভুগছিলেন। ব্রেনে টিউমার ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে। চিকিৎসকরা মনে করছেন, অশোক সাউয়ের অ্যানিউরিজম বা মস্তিষ্কের ধমনী ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণের জেরেই মস্তিষ্কের ভিতরে প্রবল রক্তক্ষরণ হয় (ইন্টার ক্রেনিয়াল হেমারেজ)। যার ফলেই মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনার তদন্তভার নিল লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ।
বুধবার সন্ধেয় চুরির মোবাইল ফোন জমা দিতে থানায় এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন অশোক সিং। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা কর হয়। কিন্তু তা ঘিরে উত্তাল হয় কলেজ স্ট্রিট চত্বর। পুলিশের বিরুদ্ধে পিটিয়ে মারার অভিযোগ তুলে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন মৃতের পরিবার। অভিযোগ সেই বিক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলেছিল বিজেপি নেতারা। অভিযোগ উঠেছিল, অশোকের মৃত্যুর পিছনে পুলিশের হাত রয়েছে। কিন্তু ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপির সেই সমস্ত অভিযোগ কার্যত নস্যাৎ হয়ে গেল।
[আরও পড়ুন: ট্রেনে কাটা পড়া পা রোগীর পরিজনের হাতে তুলে দিলেন! এনআরএসের নার্সের কাণ্ডে শোরগোল]
রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আগে থেকেই রোগে ভুগছিলেন অশোক সিং। ম্যালিগন্যান্সি থাকতে পারে তাঁর। ব্রেনে বেলুনের মতো আকৃতি তৈরি হয়েছিল। যা আচমকাই ফেটে যায়। মিলেছে ব্রেন টিউমারও। বায়োপসির জন্য় তার নমুনা রেখে দেওয়া হয়েছে। মৃতের দেহে আঘাতের কোনও চিহ্ন নেই। অশোকের ত্বক এবং নখে কালো কালো ছোপ পাওয়া গিয়েছে। যা দেখে চিকিৎসকগের প্রাথমিক ধারনা, ম্যালিগন্যান্সি বা ব্রেন ক্যানসারের চিকিৎসা চলছিল। বায়োপসির জন্য চামড়াও সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। এছাড়া তাঁর অণ্ডকোষের নিচেও দগদগে ঘায়ের চিহ্ন মিলেছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, এটা স্বাভাবিক মৃত্যু। মস্তিষ্কের ভিতরের কোনও আর্টারি বা ধমনী অনেক সময় বেলুনের মতো ফুলে ওঠে কোনও শারীরিক কারণে- সেটাকেই ‘অ্যানিউরিজম’ বলা হয়। সেটা হঠাৎ করে ফেটে গেলে রক্তক্ষরণ হয়। সেটাকেই ‘রাপচার অফ অ্যানিউরিজম’ বলে। অশোক সাউয়েরও ঠিক তাই হয়েছিল বলে দাবি ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপির তোলা সমস্ত অভিযোগে জল পড়ে গেল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।