সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজেদের অধিকারের দাবিতে দীর্ঘ মাইল পথ হেঁটে যাওয়া কৃষকদের আটকাতে লাঠি উঁচিয়েছিল পুলিশ।বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে গিয়েছিল। এই মুহূর্তে বিদ্রোহী কৃষকদের উপর পুলিশি অত্যাচারের সেসব ছবি ভাইরাল। কিন্তু এর মাঝে আরও একটি ছবিও ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়, যাকে অন্ধকারের মাঝে একচিলতে আলোর সন্ধান হিসেবে দেখলেও অতিরঞ্জিত হয় না। একদিকে যখন প্রতিবাদ দমনে জাতীয় সড়কের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ অব্যাহত, সেসময় তার পাশেই একটি হরিয়ানায় (Haryana) গুরুদ্বারে পুলিশকর্মীদের রীতিমতো অতিথি অ্যাপায়ণ করে খাওয়ানো হল। এমন মর্মস্পর্শী ছবি ছড়িয়ে পড়তেই চোখে জল নেটিজেনদের।
‘লঙ্গর’ অর্থাৎ বিনামূল্যে অভুক্ত মানুষজনকে খাওয়ানো অতি পবিত্র শিখ ধর্মে। তাই তাঁদের ধর্মীয় স্থান গুরুদ্বারে (Gurudwar) দিবারাত্র চলে খাবার তৈরি এবং পরিবেশন। নিছকই ধর্মপালন কিংবা পুণ্যের লোভে দায়সারা খাবার দেওয়া হয় না এখানে। যিনি যখনই যান, তাঁকেই অতিথি আপ্যায়ণ করে লঙ্গর খাওয়ানো হয়। সেভাবেই হরিয়ানার কার্নালের গুরুদ্বারের সেবকরা খেয়াল করেছিলেন, পুলিশ কর্মীরা দিন দুই ধরে টানা কাজ করে যাচ্ছেন। ২৬ তারিখ দেশজুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের দিন থেকে তাঁদের কাজ চলছে তো চলছেই। কেন্দ্রীয় নীতির বিরোধিতায় হেঁটে আসা কৃষক, শ্রমিকদের অবরোধ এঁরা যেভাবে দমন করছেন, তার বেশিরভাগটাই নির্মম। ফলে পুলিশের উপর সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে।
[আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের শুরুতেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনা, একাধিক মন্ত্রী পেতে পারে বাংলা]
এত অশান্ত ছবির মধ্যেও একটি ছবি একেবারে বিপরীত। লাঠি হাতে উর্দিধারীদেরই দুই সারিতে বসিয়ে আপ্যায়ণ করে খাওয়াচ্ছেন কার্নালের গুরুদ্বারের সেবকরা। মাস্ক পরে দূরত্ববিধি মেনে ভাত, ডাল, সবজি পরিবেশন করা হচ্ছে। আর পেটভরে তা খাওয়ার পর পুলিশকর্মীরা কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন।
[আরও পড়ুন: রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে করোনা পরিস্থিতি সামলাতে হবে, রাজ্যগুলিকে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট]
এভাবেই গুরুদ্বারের মানুষজন বুঝিয়ে দিলেন, লাঠি, জলকামান, টিয়ার গ্যাসের পালটায় কোনও প্রতিশোধ নয়, বরং সবরকম ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে উঠে জনসেবাই তাঁদের কাজ। এও বুঝিয়ে দিলেন, অত্যাচার, দমনপীড়ন নয়, মানুষকে আপন করে নিতে হয় এই সেবা, ভালবাসা দিয়েই। তাই তো এদেশে আজও অত্যাচারীরা অতিথির মান পান। এই ছবি নিছকই একটা ছবি, এই ছবি আসলে মানবতার এক গভীর বার্তা।