সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহারাষ্ট্রে মহাজুটির বিরাট জয়ের পর মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন একনাথ শিণ্ডে (Eknath Shinde Resign)। তবে শিণ্ডের ইস্তফাতেও রহস্য জারি রইল মারাঠাভূমে। কে বসবেন ছেড়ে যাওয়া গদিতে? বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়ণবিস নাকি একনাথ নিজেই ফিরে আসবেন কুরসির লড়াইয়ে। আরব সাগরের পাড়ে এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী পদে বিহার মডেল লাগুর আবেদন জানিয়েছে শিব সেনা।
মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ড দেশের দুই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ্যে এসেছে গত শনিবার। ২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্রে বিজেপি একাই পেয়েছে ১৩২টি আসন। অন্যান্য শরিক শিবসেনা ও এনসিপি যথাক্রমে পেয়েছে ৫৭ ও ৪১টি আসন। অর্থাৎ মহাজুটির মিলিত আসন সংখ্যা ২৩০। যেখানে ম্যাজিক ফিগার ১৪৫। অর্থাৎ ভোটের ফলেই স্পষ্ট যে মুখ্যমন্ত্রী পদে বিজেপির দাবি অনেক বেশি। কিন্তু শরিক যদি বেঁকে বসে সেক্ষেত্রে সব অঙ্ক উলটে পালটে যেতে পারে। শিণ্ডে নিজে প্রকাশ্যে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি না জানালেও, তাঁর সমর্থকরা শিণ্ডেকেই চাইছেন। এই অবস্থার মাঝে নিয়ম মেনে মঙ্গলবার রাজ্যপালের কাছে ইস্তফা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডে।
কুরসি নিয়ে টানাপোড়েনের মাঝে শিব সেনা (শিণ্ডে) সাংসদ নরেশ মাস্কে ইতিমধ্যেই বিজেপি নেতৃত্বের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, বিহারের ফর্মুলায় সরকার গঠন হোক মহারাষ্ট্রে। তিনি বলেন, "বেশি আসন না পেলেও এই বিজেপি নীতীশ কুমারকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়েছেন। তাহলে মহারাষ্ট্রে কেন সেই নিয়ম লাগু হবে না।" শিণ্ডের অনিচ্ছাতে তাঁর সমর্থকরা যে এমন দাবি তুলছেন তা মনে করার কোনও কারণ নেই। ফলে রাজনৈতিক মহলের দাবি, আসলে শিণ্ডে মনে প্রাণে চান মুখ্যমন্ত্রীর পদ। এদিকে মহাজুটির অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, বিজেপি চাইছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসুন দেবেন্দ্র ফড়ণবিস। এনসিপির অজিত অবশ্য এখনও পর্যন্ত এই লড়াইয়ে নেই। উপমুখ্যমন্ত্রী পদ পেলেই আপাতত তিনি খুশি। সমস্যা যদি থেকে থাকে সেটা ফড়ণবিস ও শিণ্ডেকে নিয়ে।
এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক মহলের দাবি, শিণ্ডে যদি এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী পদের গোঁ ধরে বসেন সেক্ষেত্রে যথেষ্ট চাপে পড়বে বিজেপি। তেমন যদি হয়, তখন এনসিপির সমর্থন নিয়ে সরকারে বসতেই পারে বিজেপি। এমনটা হলে ভবিষ্যতে মাথাব্যাথার কারণ হবে শিণ্ডের শিবসেনা। এমনও হতে পারে উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে ফের জুড়ে যেতে পারে তারা। বিজেপি চায় না তেমনটা হোক। তাই শরিককে খুশি রেখেই সিদ্ধান্ত নেবে বিজেপি। শোনা যাচ্ছে, এক্ষেত্রে ফড়ণবিসকে মুখ্যমন্ত্রী পদে রেখে শিণ্ডে ও অজিতকে দেওয়া হবে দুটি উপমুখ্যমন্ত্রী পদ। তাতে শিণ্ডের বিদ্রোহ থামবে কিনা তা অবশ্য সময়ই বলবে।