সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একুশের নির্বাচনের আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে অব্যাহতি চেয়েছিলেন তিনি। তাঁর অনুরোধ রেখে এবারে ভোটে তাঁকে দাঁড় করাননি মমতা। খড়দহ থেকে কাজল সিনহাকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। কিন্তু অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের (Amit Mitra) আরেকটি অনুরোধ রাখতে পারলেন না মুখ্যমন্ত্রী। অর্থ দপ্তরের দায়িত্ব থেকে পুরোপুরি অব্যাহতি দেওয়া গেল না তাঁকে। রাজ্যের ৩ বারের অর্থমন্ত্রীকে নিজের অর্থ উপদেষ্টা পদে বসালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যের অর্থবিষয়ক মুখ্য উপদেষ্টা রাজ্যে নতুন পদ। এই পদেই অমিত মিত্রকে নিয়োগ করা হয়েছে। কঠিন পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রীকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবেন তিনি, দেবেন প্রয়োজনীয় পরামর্শ। নতুন পদে পূর্ণমন্ত্রীর মর্যাদা পাবেন অমিত মিত্র। ঠিক যেভাবে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য আলাদা পদ তৈরি করা হয়েছিল – মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা, অমিত মিত্রর জন্যও সেটাই করলেন মমতা।
[আরও পড়ুন: সিঙ্গুরের মতো নয়, বড়সড় ক্ষতিপূরণ দিয়েই দেউচা-পাচামিতে শিল্প, বিধানসভায় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
সূত্রের খবর, অমিত মিত্র ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেই মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ভগ্নস্বাস্থ্যের জন্য তিনি নির্বাচনে লড়তে চান না। ভোটে জিতে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরও অমিতবাবু অর্থমন্ত্রী হতে চাননি। কিন্তু তিনি সেই ২০১১ সাল থেকে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী। সেসময় রাজ্যের বিপুল দেনা সামলে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল তাঁর সামনে। যা বেশ দক্ষতার সঙ্গে সামলে সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। সেভাবে কোনও ক্ষেত্রে কর না বাড়িয়েও তৃণমূল সরকারের আমলে একের পর এক সমাজকল্যাণ মূলক প্রকল্পের খরচ জুগিয়ে গিয়েছেন অমিত মিত্র। কর না বাড়িয়েও রাজ্যের রাজস্ব আদায় কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন অমিতবাবু।
গোটা দেশে যখন আর্থিকক্ষেত্রে চরম দুরবস্থা চলছে, তখনও বাংলায় তাঁর প্রভাব পড়তে দেননি অর্থনীতির অধ্যাপক অমিতবাবু। গোটা দেশের মধ্যে জিডিপি বৃদ্ধির নিরিখে আজ বাংলা একেবারে প্রথম সারিতে। সবটাই সম্ভব হয়েছে অমিত মিত্র এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৌশলী অর্থনৈতিক নীতিতে।
[আরও পড়ুন: শুধু হাওড়া-কলকাতায় ভোট কেন? পুর নির্বাচন নিয়ে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা বিজেপির]
আজও তৃণমূল (TMC) সরকারের সামনে কড়া চ্যালেঞ্জ। আগের প্রকল্পগুলির পাশাপাশি ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে’র মতো নতুন প্রকল্পও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার খরচও সামলানোর ভার রাজ্যের কোষাগারের উপরই। সেইসঙ্গে সামলাতে হবে কোভিডের ধাক্কা। সেকারণেই মমতা অমিত মিত্রকে অনুরোধ করেছিলেন, অন্তত মাস ছ’য়েক যেন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলে দেন তিনি। মমতার অনুরোধেই ছ’মাসের জন্য অর্থমন্ত্রী হতে রাজি হয়েছিলেন অমিতবাবু। ৬ মাসের মেয়াদ ফুরোলে তিনি ‘ছুটি’ নেবেন এবং মেয়ের কাছে বিদেশে গিয়ে সময় কাটাবেন। এমনটাই ছিল ইচ্ছা ছিল অমিতবাবুর। ছ’মাস পর তাঁর দায়িত্ব কমল বটে, কিন্তু পুরোপুরি অব্যাহতি পেলেন কই! আগামী দিনেও মুখ্যমন্ত্রীকে অর্থ বিষয়ক পরামর্শ দেওয়ার গুরুদায়িত্বটি যে তাঁকে আগের মতোই পালন করে যেতে হবে।