অনেকদিন পর বড় পর্দায় ফিরছেন অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। হাতে একগুচ্ছ কাজ। তাঁর সঙ্গে কথোপকথনে বিদিশা চট্টোপাধ্যায়
কেমন আছেন?
- এমনিতে খুব ভালো আছি, তবে ঠান্ডা লেগেছে, জ্বর...
সে কী! ভাইরাল ফিভার...
- না, ভাইরালকে দোষ দেওয়ার আগে আমি যে নিজেই দোষের ভাগী সেটা মেনে নিতে হবে...
কেন? বৃষ্টিতে ভিজলেন বুঝি?
- না, কারণ আমি যখন বৃষ্টিতে ভিজতে চাই তখন সেখানে বৃষ্টি হয় না। বৃষ্টির সঙ্গে আমার একটা মান-অভিমান চলে। এর মধ্যে প্রচুর ঠান্ডা আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিংক্স খেয়েছি, সেই জন্যই এই অবস্থা।
জয়দীপ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ওয়েব সিরিজ ‘কাঁটায় কাঁটায়’ আসছে জি ফাইভে। এদিকে
সৃজিত মুখোপাধ্যায় ছবির শুটিং করলেন, হাতে আরও ছবি রয়েছে। সেকেন্ড ইনিংস-এর শুরুটা ভালোই হল তাহলে...
- না না.. আমি একটা কথা বলতে চাই, আসলে এইরকম সেকেন্ড ইনিংস আমার মাঝে মাঝেই আসে। আমার এটা ইনিংস আফটার ইনিংস বলতে পারো বা নতুন ইনিংস... (হাসি)। আমার কেরিয়ারে এটা বহুবার হয়েছে। ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড-এর পরেও হয়েছে। একেকটা ফেজ থাকে কাজ করার।
এটা কেন হয়? আপনার মতো দক্ষ অভিনেত্রীকে বেশ কিছুদিন বসে থাকতে হয়, তারপর আবার কাজ আসে- এটা অন অ্যান্ড অফ চলতেই থাকে!
- তার মধ্যে আমার দায় বোধহয় একটু বেশিই। কারণ যে চরিত্রে আমি নিজস্বতা দিতে পারব না, তেমন চরিত্র করতে পছন্দ করি না। তেমন কাজ করার থেকে কেরিয়ারে একটু খরা পছন্দ করি। সেটা আমার জীবনে সবরকমভাবে সহায় হয় না নিশ্চয়ই কিন্তু সেটা আমার ক্রিয়েটিভ কেরিয়ারে একটু শান্তি দেয়।
‘কাঁটায় কাঁটায়’ নিয়ে জানতে চাই...
- এটার শুটিং হয়েছে প্রায় দুবছর আগেই, এখন মুক্তি পাচ্ছে। নারায়ণ সান্যালের ‘কাঁটা’ সিরিজ অনুপ্রাণিত যেখানে মিস্ট্রি সলভ করছে ‘পি.কে. বাসু’। এখানে আমি স্ত্রীর চরিত্রে। পি.কে. বাসুর চরিত্রে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। যদিও মূল গল্পের থেকে এখানে স্ত্রীর চরিত্র অনেক বেশি অ্যাক্টিভ করা হয়েছে। আরও অনেকে রয়েছেন, কোন গল্প বা কোন চরিত্রকে সেটা এক্ষুনি রিভিল করা যাবে না।'
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পরবর্তী ছবি ‘সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই’ যেটা ‘টুয়েলভ অ্যাংরি মেন’ থেকে অনুপ্রাণিত, সেই ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
- সৃজিতের সঙ্গে অনেকবার কাজের কথা হয়েছে, বহু স্ক্রিপ্ট পড়েছি তো সেসব হতে হতে ‘জাতিস্মর’-এ একটা ক্যামিও করেছিলাম। এবার প্রথম সৃজিতকে পরিচালক হিসাবে পেলাম। যেটা প্রথমেই মনে হয় ওর মাথাটা খুব পরিষ্কার। যা বিশ্বাস করে সেটা নিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে যায়। কারও কথায় নড়ে যায় না। এতজন অভিনেতাকে নিয়ে কাজ করার যে প্রেশার থাকে সেটা নিজের উপর চেপে বসতে দেয়নি। এই যে ‘টুয়েলভ অ্যাংরি মেন’ বা সৃজিতের ছবির ক্ষেত্রে ‘টেন অ্যাংরি মেন অ্যান্ড টু উইমেন’– সৃজিত প্রত্যেককে এত লিবার্টি দিয়েছে ভাবতে পারবে না। আমাদের ইমপ্রোভাইস করার সুযোগ দেওয়াতে ‘ইন্টারপ্লে’-র মতো ব্যাপার হয়েছে। আর এই বারোজন অভিনেতার সবাই সবাইকে সাপোর্ট করেছে। কোনও রেষারেষি ছিল না। আমরা এই বারোজন সারাক্ষণ একসঙ্গে গোটা ছবিজুড়ে ছিলাম। লু ব্রেক বাদ দিলে কেউ আলাদা হইনি (হাসি)।
[আরও পড়ুন: বিমানবন্দরে একসঙ্গে অর্জুন-মালাইকা! সম্পর্ক জোড়া লাগল?]
আপনি তো মানসী সিনহার প্রেজেন্ট করা একটি ছবিতে অভিনয় করছেন?
- হ্যাঁ, পরিচালনায় বাপ্পা। ছবির নাম ‘সারাহ মেট সাহির’। এই ছবিতে আমি একজন প্রফেসর। অসমবয়সি প্রেমের গল্প। এটার শুট হবে নভেম্বরে, আর আগে ক্যামেলিয়ার ওটিটির জন্য দেবালয়ের সঙ্গে সিরিজের (গোর্কির মা) শুটিং করব আগস্টে! ‘ম্যাডাম সেনগুপ্ত’-র শুটিং চলছে। পরপর কাজ হচ্ছে, টাচউড! আসলে কী জানো তো, সময় না হলে কিছুই হয় না। আর আমি তো অত অ্যাগ্রেসিভ নই। সোশ্যাল মিডিয়াতে খুবই দুর্বল। আমি যা দেখলাম কিছু যায় আসে না। যদি সত্যি কারও দরকার হয় সে আমাকে ডাকবে।
কাজ যখন কম থাকে, তখন কখনওই কি হতাশা আসে না?
- যদি কখনও হতাশা আসে, তার দায় আমি কাউকে দিই না। দায়টা আমারই। কারণ আমি এটা চুজ করেছি যে কাজ পছন্দ না হলে করব না। ফলে দায়টা তো আমারই। এই দায় কারও নয়।
কাজ ভালো চলছে। বিয়ে ভাঙার পর বিচ্ছেদের একটা সময় ছিল। এখন জীবনে প্রেম কেমন?
- তুমি জানো, এইগুলো নিয়ে আমি কথা বলি না। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলি না বলেই আমি অনেক কিছু বাঁচিয়ে চলতে পারি। এই যে ট্রোলিং, নানা ঘৃণার মন্তব্য- এগুলো কি সত্যিই কারও ভালো লাগে বলো? যারা ট্রোল করে তাদের ভাষার কোনও শালীনতা নেই, তারা কী বলছে তারা জানে না। তো আমি আমার ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে একজন আউটসাইডারকে অ্যালাউ করব কেন বলো? আমি সেটা করি না। আর ডিজিটাল মিডিয়াম হওয়ার অনেক আগেই থেকেই করি না।