অর্ণব আইচ: আবারও পশুপ্রেমী সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর সংসদীয় এলাকায় পোষ্য হেনস্তার ঘটনা। রাস্তায় জন্ম হলেও তার চেহারায় যেন ‘বিদেশি ছাপ’। তাই কালো রঙের সারমেয় শাবকটি সহজেই লোকের চোখে পড়ে গিয়েছিল। রাস্তার এক পাশে খাঁচার মধ্যে থেকে খেয়েদেয়েই ভাইবোনেদের সঙ্গে বড় হচ্ছিল ‘কুড়ো’। হঠাৎই দিনদুপুরে প্রকাশ্য রাস্তা থেকেই চুরি গেল সে। কুকুর শাবকটিকে কোলে তুলে আদর করতে করতেই টোটোয় করে আদরের ‘কুডে়া’কে নিয়ে উধাও হয়ে গেল চোর। সেই চোর খুঁজতে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন শহরের এক তরুণী ও তাঁর বাবা। পূর্ব যাদবপুর থানায় বিষয়টি জানিয়েছেন তাঁরা।
সিসিটিভি ফুটেজে উঠেছে পোষ্য চুরির ঘটনা। পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, যে অঞ্চল থেকে কুকুর চুরি হয়েছে অথবা কুকুরকে সরানোর চেষ্টা হয়েছে, সে জায়গায় অপরাধের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এই ঘটনাটিকেও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঘটনার সূত্রপাত পূর্ব কলকাতার নয়াবাদে। সেখানেই একটি আবাসনে পরিবার নিয়ে থাকেন ড. জীবনকৃষ্ণ দাস। মাসকয়েক আগেই তাঁদের আবাসনের কাছে জন্ম নেয় ৫টি কুকুর শাবক। তখন থেকেই তাদের দেখাশোনা করতেন একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী ওই তরুণী। এই কয়েক মাসে কুকুর শাবকগুলি একটু বড়ও হয়েছে। তাদের যাতে থাকতে অসুবিধা না হয়, তার জন্য একটি খাঁচা বানিয়ে দেন বাবা ও মেয়ে। রাতে তাদের খাঁচার মধ্যে রেখে দেওয়া হলেও দিনের বেলায় খুলে দেওয়া হয় তালা। নিজেদের মতো এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াত ৫ ভাই-বোন।
[আরও পড়ুন: পুরভোটে প্রার্থী হতে দেড় হাজার বায়োডেটা জমা, তালিকা চূড়ান্ত করতে হিমশিম বিজেপি ]
তরুণী নিজেই মাছ ও মাংস দিয়ে তাদের লাঞ্চ আর ডিনারের ব্যবস্থা করেন। ওই তরুণী ও তাঁর বাবা জানান, পাঁচটি শাবকের মধ্যে চোরেদের হাতে পড়া ‘কুড়ো’ জন্মানোর পর অসুস্থ ছিল। পা টেনে হাঁটত। ওই তরুণী তার চিকিৎসা শুরু করান। ওষুধ ও খাবার খাইয়ে তাকে সুস্থ করে তোলেন। সুস্থ হয়ে ওঠার পর তার চেহারাও ভাল হয়। তাই অনেকের নজরও ছিল ‘কুড়ো’র উপর।
আবাসনে লাগানো সিসিটিভির ফুটেজে উঠেছে পোষ্য চুরির দৃশ্য। সেই ফুটেজ দেখানো হয়েছে পুলিশকেও। ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, একটি কুকুরের সঙ্গে সঙ্গে হেঁটে চলেছে যুবক। তাকে আদরও করছে সে। একটি ফাঁকা জমিতে কুকুর শাবকটি যাওয়া মাত্রই যুবক তাকে কোলে তুলে নেয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই এসে পড়ে একটি টোটো। সেই গাড়িটি করেই কুকুর কোলে নিয়ে উঠে পড়ে সে। টোটো করে সে নিউ গড়িয়া স্টেশন বা পঞ্চসায়রের আশপাশের কোনও জায়গায় গিয়েছে, এমন হওয়া সম্ভব। যদিও কেন কুকুরটিকে চুরি করতে হল, তা নিয়ে এখনও ধন্দে বাবা ও মেয়ে। বিভ্রান্ত পুলিশও।
[আরও পড়ুন: এপ্রিল থেকেই নিজের জেলার স্কুলে পড়াবেন শিক্ষকরা, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শুরু প্রক্রিয়া]
পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে আবাসনের পাশেই বসা একজন ইস্ত্রিওয়ালা ও আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। দিনের বেলায় তাঁদের চোখের সামনে থেকে কীভাবে কুকুরটিকে নিয়ে গেল, অথচ কেউ কেন বাধা দিলেন না, তা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে। প্রাথমিক তদন্ত করে ওই যুবককে শনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
The post টোটোয় করে পোষ্য চুরি, পুলিশের দ্বারস্থ বাবা ও মেয়ে appeared first on Sangbad Pratidin.