দুই মাসে ৫টি রিলিজের সামনে দাঁড়িয়ে অনির্বাণ চক্রবর্তী। মুখোমুখি শম্পালী মৌলিক
ডিসেম্বর মাস তো প্রায় আপনার! ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’-র সেকেন্ড সিজন আসবে, ‘খাদান’ আসবে যেখানে আপনি একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে। অন্যদিকে ‘চালচিত্র’-তে অন্যতম প্রধান চরিত্রে।
- (জোরে হাসি) ‘ফেলুদা’য় আমি জটায়ুর চরিত্রে সকলেই জানেন। ‘খাদান’-এ একজন আদিবাসী নেতা ‘মান্ডি’-র ভূমিকায়। চরিত্রটার ক্ল্যাশ আছে কিন্তু ভিলেন নয়। আর ‘চালচিত্র’-তে অন্যতম প্রধান এক পুলিশের চরিত্রে।
এরপরে আসবে আপনার ‘একেনবাবু’ এবং ‘অপরিচিত’ ছবিটি।
- ঠিকই, সেটা জানুয়ারি মাসে।
অর্থাৎ সামনের দুটো মাসে আপনার ৫টা রিলিজ। একই সঙ্গে চলতি মাসে একাধিক ছবির শুটিংয়ে ব্যস্ত আপনি। কেমন অনুভূতি?
- খুব ভালো লাগছে। আমি লুকবো না, বিনয় করব না। আমরা তো চাই, এরকম কাজ আসুক। এগুলো দুমাসে রিলিজ হচ্ছে, তার মানে দুমাসে শুট করা নয়। কোইন্সিডেন্টালি দু’মাসে রিলিজ হচ্ছে, সেটা ভালো লাগছে। আর এই সময়ে আমার অভিনীত যে পঁাচটা রিলিজ করছে, সবকটা খুব আলাদা রকমের। আমার চরিত্রগুলো আলাদা, তার মধ্যে দুটো ওয়েব সিরিজ, তিনটি সিনেমা। সবকটাই অন্যতম প্রধান চরিত্র এবং খুব ভিন্ন ধরনের। এই যে পর পর প্রেজেন্ট করার সুযোগ পাচ্ছি, সেটা ভালো লাগছে।
২০২৪ কি তাহলে ব্যস্ততম বছর গেল?
- খুবই ব্যস্ততায় কেটেছে। একটা সময় শারীরিকভাবে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু মনে মনে আনন্দে ছিলাম, কাজের মধ্যে ছিলাম যে।
প্রাথমিকভাবে আপনি মানুষের কাছে পরিচিত ছিলেন মজার অভিনেতা হিসাবে, একেনবাবু যেহেতু আপনার ‘ক্লেম টু ফেম’। ক্রমশ কঠিন পুলিশ অফিসার, ক্রূর ভিলেন হয়ে উঠলেন। এই ট্রান্সফরমেশনটা নিজে কীভাবে দেখছেন?
- আমি এটার জন্য এক্সাইটেড ছিলাম। যখন আমি একেনবাবু হিসাবে জনপ্রিয় হলাম, একেনবাবুর ধরনেরই চরিত্রের অফার এসেছিল আমার কাছে। কিন্তু সেগুলো আমি নিইনি। নিজের কাছে এই সিদ্ধান্ত নেওয়াই ছিল। একই ধরনের চরিত্রে নিজেই বোর হয়ে যাব ভেবে নিইনি। আর পরিচালক, প্রযোজক, দর্শক যদি আমাকে পছন্দ না করত, এত বিভিন্ন ধরনের চরিত্র আমি পেতাম না। সেই সাপোর্ট আমি সবার কাছে পেয়েছি, সেটা আমাকে খুব হেল্প করেছে।
আপনার অভিনীত ‘চালচিত্র’, ‘খাদান’ এবং ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’ একই সময়ে আসছে। ‘জটায়ু’ চরিত্রের জন্য দর্শকের মনে আলাদা জায়গা রয়েছে, সেক্ষেত্রে আপনার ‘চালচিত্র’-র পুলিশের চরিত্রটির ক্ষেত্রে ছাপ ফেলা কঠিন হতে পারে?
- না, আমার তা মনে হয় না। এই যে ‘চালচিত্র’-র চরিত্রটি অফার করেছে, বা ‘খাদান’-ও যেটা একই দিনে রিলিজ করছে, সেইগুলো কিন্তু তাহলে আমাকে অফারই করত না। কারণ, একেনবাবু বেশ অনেকদিন হয়ে গেল, দর্শক যদি প্রত্যাখ্যান করত আমাকে পরিচালক-প্রযোজকরা জানতে পেরে যেত, অনির্বাণকে অন্য চরিত্রে দর্শকরা পছন্দ করছে না। তাহলে আমাকে আর নিতই না। কারণ, এইসব তথ্য সবার কাছে থাকে। সেখানে আমি লাকি যে দর্শকের সমর্থন পেয়েছি। এই যে ২০২৪-এর কথা বললেন, এত কাজ প্রোডাকশন, কো-অ্যাক্টর পরিচালকের সাপোর্ট না পেলে করতে পারতাম না। অনেক সময় এমন হয়েছে, আমার কারণে ডেট অ্যাডজাস্ট করতে হয়েছে বাকিদের। সেটা কিন্তু সবাই হাসিমুখে করেছে। লজিসটিক্স-এর সাপোর্ট কিন্তু বড় ব্যাপার। একইদিনে রিলিজ করছে যখন, এটা এই জন্য অ্যাফেক্ট করা উচিত নয়। কারণ ধরন একদম আলাদা ছবি দুটোর, আর অন্যটা তো সিরিজ।
‘চালচিত্র’ ছবিতে পুলিশের মানবিক দিকগুলো উঠে আসবে, আঁচ করা যাচ্ছে।
- সবার মানবিক দিক উঠে এসেছে। পুলিশের চরিত্রে আমি প্রচুর অভিনয় করেছি। সে ওয়েব সিরিজ বা ফিল্ম। সেখানে খুব খারাপ পুলিশ, গ্রে শেডের বা কমিক টাইপের ক্যারেক্টার, বা খুব সিরিয়াস– সবই করেছি। কিন্তু ‘চালচিত্র’-তে আমার চরিত্র ‘নাসির’ মিতভাষী, ঠান্ডা মাথার মানুষ, সর্টেড। কণিষ্ক মানে যে প্রধান পুলিশ (টোটা রায়চৌধুরি) তার সঙ্গে আমার কমিউনিকেশন একটু চোখের ইশারাতেও হয়ে যায়। এই দুজন একসঙ্গে অনেকদিন কাজ করছে, ফলে দারুণ আন্ডারস্ট্যান্ডিং ওদের মধ্যে। যেখানে টেনশন হওয়ার সম্ভাবনা আছে, টোটার চরিত্র নাসিরকেই বলে দেখে নিতে। নাসিরকে এতটাই ভরসা করে। ইনফ্যাক্ট এই চারজন পুলিশের মধ্যেই হিউম্যান রিলেশনশিপ বেশ ভালো আছে।
আপনার চরিত্রের ক্ষেত্রে বোধহয় বাবা-মেয়ের সম্পর্কটা খুব গুরুত্বপূর্ণ?
- ঠিকই। এখানে আমি সিঙ্গল পেরেন্ট। তানিকা রয়েছে আমার মেয়ের চরিত্রে। যে মেয়ে বাবাকে কাছছাড়া করতে চায় না। তো পুলিশের চাকরি, কাজ আর মেয়েকে সময় দেওয়া নিয়ে টানাপোড়েন চলতে থাকে। বাকিটা ছবিতে দেখুক দর্শক (হাসি)। এই চারজন পুলিশের ইমোশনাল জার্নির দিক উঠে এসেছে ছবিতে।
তাহলে বলা যায়, ‘চালচিত্র’ নিয়ে আশাবাদী?
- খুবই আশাবাদী ‘চালচিত্র’ নিয়ে। ‘খাদান’-এর যে অ্যাপ্রোচ, আর ‘চালচিত্র’-র অ্যাপ্রোচ আলাদা, সকলেই বুঝতে পারছেন, একই দিনে রিলিজ করলেও।
হিন্দি ছবির অফার আসছে?
- হিন্দি ছবির অফার যে মাঝে মাঝে আসে না তা নয়। তার মধ্যে অনেকগুলোর ক্ষেত্রে আমার মনে হয়নি যে, আমার কনট্রিবিউট করার মতো কিছু আছে।