সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পরই পালানোর চেষ্টা করেছিলেন আওয়ামি লিগের নেতা-মন্ত্রীরা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। অনেককেই আটক কিংবা গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এবার পার পেলেন না বাংলাদেশের প্রাক্তন সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি। সোমবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
গত ৫ আগস্ট ব্যাপক গণ আন্দোলনের জেরে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন হাসিনা। তাঁর চলে যাওয়ার পর থেকে খোঁজ মিলছে না আওয়ামি লিগের বহু নেতা-মন্ত্রীর। নিরাপত্তার কারণেই অনেকে লুকিয়ে রয়েছেন বলে খবর। আবার অনেক সাংসদ ও প্রাক্তন মন্ত্রীরা বিভিন্ন দেশে পালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু হাসিনার নেতা-মন্ত্রীদের ধরপাকড় জারি রয়েছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো সূত্রে খবর, এদিন রাজধানী ঢাকার বারিধারা এলাকা থেকে দীপু মনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। মহম্মদপুর থানার একটি হত্যা মামলায় অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছে তাঁর নাম। সে কারণেই এই গ্রেপ্তারি।
[আরও পড়ুন: আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধের দাবিতে হাই কোর্টে আবেদন, বাংলাদেশে আরও বিপাকে হাসিনার দল]
এনিয়ে ডিএমপির এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দীপু মনিকে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দীপু মনি বাংলাদেশ আওয়ামি লিগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি এর আগে তৎকালীন হাসিনা সরকারের বিদেশ ও শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। দীপু মনি যখন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন তখন শিক্ষাক্ষেত্রে নানা সংস্কারমূলক কাজ করেছিলেন। বিশেষ করোনা অতিমারির সময়। পড়াশোনায় ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে ৬ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালানোর আগে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার করা হয় প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী হাসান মাহমুদকে। ওইদিনই আটক হন প্রাক্তন টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। পরে ১৪ আগস্ট তাঁর গ্রেপ্তার হওয়ার খবর জানানো হয়। এছাড়া ১৩ আগস্ট প্রাক্তন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সলমান এফ রহমানকে ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে এক হকার নিহত হওয়ার ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় করা হত্যা মামলায় অভিযুক্ত দেখানো হয়।
এর পর ১৬ আগস্ট রাতেই ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়ি থেকে প্রাক্তন জলসম্পদমন্ত্রী ও আওয়ামি লিগের প্রাক্তন সাংসদ রমেশ চন্দ্র সেনকে আটক করে পুলিশ। তাঁকেও একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওইদিনই সেনাবাহিনী থেকে সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকেও গ্রেপ্তার করা হয়। জিয়াউল আহসান সর্বশেষ টেলিযোগাযোগ নজরদারির জাতীয় সংস্থা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধেও নিউমার্কেট থানার ওই হকার হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।