সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মানিকতলায় যুবক খুনের ঘটনায় পুলিশের জালে আরও এক। বিহার-নেপাল বর্ডার থেকে ধরা পড়ল অঙ্কিত গুপ্ত। অঙ্কিত-সহ এখনও পর্যন্ত মোট ছ’জন পুলিশের জালে ধরা পড়েছে। পুলিশের অনুমান এই অঙ্কিতই নিহত দীপক প্রসাদকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। তারপর বিপদ বুঝে সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ধরা পড়ে যায়। ধৃতকে কলকাতায় আনা হচ্ছে বলেই জানা গিয়েছে।
গত রবিবার সন্ধ্যায় মানিকতলার বাগমারির জর্জবাগানে একটি সাদা রঙের গাড়ি, যেটি অ্যাপ ক্যাব হিসাবে ব্যবহার হত, সেটি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় নামিয়ে দেওয়া হয় মানিকতলার বাসিনদা দীপক প্রসাদকে। তাঁর বাঁ গলা, পেট ও বুকে ছিল ছুরি দিয়ে আঘাতের চিহ্ন। এলাকার এক বাসিন্দা জানান, সাদা গাড়িটিতে চলছিল লাউডস্পিকার। ভিতরে ছিল পাঁচজন। দুই প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রাস্তার পাশে দু’টি মালবাহী গাড়ি পার্ক করা ছিল। তার পাশে এসে দাঁড় করানো হয় গাড়িটিকে। গাড়ি চালাচ্ছিল মনোজ। তার পাশে ছিল মহিন্দর। পিছনের সিটে দীপকের দু’পাশে বসেছিল অঙ্কিত ও পলু নামে দুই ‘বন্ধু’।
[আরও পড়ুন: প্রেমিকার নগ্ন ছবি বন্ধুবান্ধবদের শেয়ার! প্রতিবাদ করায় অ্যাসিড হামলার হুমকি যুবকের]
রক্তাক্ত অবস্থায় দীপককে বের করে দুই গাড়ির মাঝখানে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। এর পর তিনি পড়ে যান। গাড়ি থেকে বেরিয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়ে অঙ্কিত। বাকিরা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায়। অন্য একটি মালবাহী করে পিকনিকে গিয়েছিল আরও জনা কুড়ি যুবক। তারাও এসে পড়ে এলাকায়। পুলিশ কৃষ্ণ, পলু, মনোজ, মহিন্দর, মংরুকে মানিকতলা থানায় আটক করে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে। ঘটনার পর থেকেই পরিবারের লোকেদের নিয়ে পলাতক ছিল অঙ্কিত। বিহার-নেপাল সীমান্তে ধরা পড়ে যায় সে।
এর আগে দীপকের স্ত্রী মিতালি জানান, রবিবার সকালে ক্যাপ্টেন ভেড়িতে পিকনিকে যাওয়ার নাম করে বন্ধু কৃষ্ণ তাঁর স্বামীকে ডেকে নিয়ে যায়। বিকেল তিনটের পর থেকে তিনি স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। প্রথমে মালবাহী গাড়িটি পিকনিকে রওনা দেয়। এর ঘণ্টা দেড়েক পর মনোজের গাড়ি করে পাঁচজন যায় পিকনিকে।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, পিকনিকে রোহিত নামে এক যুবককে গালিগালাজ করেন দীপক। তারই জেরে শুরু হয় গোলমাল। মদ্যপ ও নেশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রচণ্ড মারধর করা হয় দীপককে। অভিযুক্তদের কাছে ছিল গাঁজা কাটার জন্য ছুরি। গাড়ির মধ্যেই একাধিক আঘাত করা হয়। শেষ আঘাতটি করা হয় গাড়ি থেকে দীপককে নামানোর পর। যদিও এলাকার বাসিন্দাদের মতে, এই খুনের পিছনে রয়েছে ব্যবসায়িক কারণ।
বাগমারিতে পর পর রয়েছে অ্যাসিডের কারখানা। সেই জল মেশানো অ্যাসিড পাঠানো হয় মেটিয়াবুরুজের জামাকাপড়ের কারখানায়। নিজের মালবাহী গাড়ি করে দীপক এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ীর অ্যাসিডের ড্রাম পৌঁছে দিতেন কারখানাগুলিতে। বহু চালক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অসাধু উপায়ে রোজগার করেন। কিন্তু দীপক তা করতেন না বলে কয়েকজনের রাগ তাঁর উপর থাকতে পারে।