সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেনে (Ukraine) সিঁদুরে মেঘ দেখছে আমেরিকা। হম্বিতম্বি করলেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাশিয়াকে একঘরে করতে পারছে না ওয়াশিংটন। ভারত, চিন ও আরব দেশগুলি এখনও মস্কোর পাশে। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ইস্যুতে একজোট নয় ইউরোপও। এহেন পরিস্থিতিতে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
[আরও পড়ুন: মারিওপোলে সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা রাশিয়ার, চেরনোবিল থেকে ফৌজ সরাচ্ছে মস্কো!]
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, ভারতীয় সময়ে বৃহস্পতিবার ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন জয়শংকর। তাঁদের আলোচনায় ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের বিষয়টি উঠে আসে। যুদ্ধজর্জর দেশটিতে মানবিক বিপর্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন বিদেশ সচিব। তবে বিশ্লেষকদের মতে, মস্কোকে একঘরে করতে নয়াদিল্লিকে পাশে চাইছে ওয়াশিংটন। কারণ, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার চাপ সামলাতে ভারতের কাছে অপরিশোধিত তেল বিক্রি করছে রাশিয়া। ইউরোপ ও আমেরিকার মার্কেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রুশ পণ্যের বড় বাজার হয়ে উঠতে পারে ভারত। সেক্ষেত্রে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অনেকটাই ফিকে হয়ে যাবে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মঞ্চ যেমন রাষ্ট্রসংঘে পুরনো বন্ধু মস্কোর বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবে ভোট দেয়নি নয়াদিল্লি। একইভাবে চিনও রাশিয়ার পাশে। মার্কিন মিত্রদেশ যেমন সৌদি আরব স্পষ্ট জানিয়েছে তারা রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করবে না। ফলে ইউক্রেন নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে বাইডেন প্রশাসন।
এদিকে, ইন্দো-প্যাসিফিক বা ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগে আমেরিকা। এবং কমিউনিস্ট দেশটির আগ্রাসনের মোকাবিলায় ভারতই যে তুরুপের তাস তা ভালই জানে ওয়াশিংটন। তাই এদিন ইঙ্গিতে বেজিংকে একহাত নিয়ে ইন্দো-প্যাসিফিকে মুক্ত বাণিজ্য ও নৌ পরিচালনার স্বাধীনতা বজায় রাখার বিষয়েও জয়শংকরের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেন ব্লিঙ্কেন।
উল্লেখ্য, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের আবহেই আজ ভারত সফরে আসছেন রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, আজই ভারতে আসছেন ব্রিটেনের বিদেশ সচিব লিজ ট্রাসও। এপ্রিলের ১ তারিখ নয়াদিল্লিতে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন সের্গেই লাভরভ। মনে করা হচ্ছে, ইউক্রেন যুদ্ধ ও মস্কোর উপর চাপানো আর্থিক নিষেধাজ্ঞার বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে দু’জনের মধ্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, কম দামে রাশিয়া থেকে আরও অপরিশোধিত তেল কিনতে চায় ভারত (India)। কিন্তু মার্কিন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার জেরে ডলারে টাকা মেটাতে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে নয়াদিল্লিকে। তাই লাভরভের সফরকালে ‘রুপি-রুবল’ লেনদেনের একটি কাঠামো গড়ে তোলা নিয়েও আলোচনা হবে।