সুব্রত বিশ্বাস: তৃতীয়বারের জন্য সিবিআই (CBI) জেরার মুখে কয়লা কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত ব্যবসায়ী অনুপ মাজি ওরফে লালা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তলব পেয়ে সোমবার নিজাম প্যালেসে যান তিনি। সূত্রের খবর, বেলা ১১টা নাগাদ নিজাম প্যালেসে পৌঁছন লালা। কয়লা কেলেঙ্কারির (Coal scam) প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই আধিকারিকরা। তবে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত লালার শীর্ষ আদালতের (Supreme court) ‘রক্ষাকবচ’ রয়েছে। অর্থাৎ ওইদিন পর্যন্ত তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না সিবিআই। কিন্তু তারপর জেরায় লালা সহযোগিতা না করলে গ্রেপ্তার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। রাজ্যে নির্বাচন চলাকালীন কয়লা ও গরু পাচার তদন্ত নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এই সক্রিয়তায় সন্দিহান অনেকেই। তবে সূত্রের খবর, এবার এই দুই কেলেঙ্কারির জাল গুটিয়ে আনতে চাইছে সিবিআই, তাই এত তৎপরতা।
রাজ্যে নির্বাচন চলাকালীনই কয়লা কাণ্ডের কিনারায় নতুন সূত্র হাতে আসে আরেক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির (ED)। শনিবার রাতে দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বাঁকুড়ার আইসি অশোক মিশ্রকে। এই মামলায় এই প্রথম রাজ্য পুলিশের কোনও আধিকারিককে গ্রেপ্তার করা হল। অশোক মিশ্র সম্পর্কে কয়লা ও গরু পাচারচক্রের মূল অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রর আত্মীয়। ফলে তিনি জালে আসায় মামলায় বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলবে বলে আশা ইডির আধিকারিকদের। তা জেনে আশাবাদী সিবিআইও। কারণ, এর আগে একাধিকবার সিবিআই তদন্তকারীরা অশোক মিশ্রকে জিজ্ঞসাবাদ করেছিলেন। কিন্তু গ্রেপ্তার করতে পারেননি। শনিবার দিল্লিতে তাঁকে ডেকে জেরার পর সন্তুষ্ট না হওয়ায় ইডি আধিকারিকরা গ্রেপ্তার করেন।
[আরও পড়ুন: গভীর রাতে কৈখালি ও লেকটাউন বিজেপি পার্টি অফিসে হামলা, কাঠগড়ায় তৃণমূল]
এরপর সোমবার লালাকে নিজাম প্যালেসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। এর আগে কয়েকবার সিবিআইয়ের জেরা এড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, সেই হাজিরা এড়িয়ে তিনি তলে তলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে নিজের সুরক্ষাকবচের আবেদন করছিলেন। সেইমতো ৬ তারিখ পর্যন্ত তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। সূ্ত্রের আরও খবর, কয়লা পাচারের সঙ্গে আর কারা জড়িত, কীভাবে পাচারের অর্থ বণ্টন করা হতো, কারাই বা ভাগ পেতেন, লালাকে জেরা করে সেসব তথ্যই হাতে পেতে চাইছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। বঙ্গে ভোটযুদ্ধ চলাকালীন বারবার বিজেপি নেতাদের নিশানায় উঠে এসেছে কয়লা ও গরু পাচারচক্র। এই ইস্যুতে তাঁরা বারবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম জড়িয়ে আক্রমণ শানাচ্ছেন। দ্রুত সেসব অভিযোগেরই সত্যতা যাচাই করতে মরিয়া সিবিআই, ইডি।