সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এই শহরে পা রাখার আগেই জেসন কামিন্সের (Jason Cummings) দাদা ডিনো বলেছিলেন, ”ভাইয়ের বাঁ পা কথা বলে। মোহনবাগান (Mohun Bagan) জার্সিতে অনেক গোল করবে।” এএফসি কাপের প্রাথমিক পর্বের প্লে অফে নেপালের মাচিন্দ্রা এফসি-র বিরুদ্ধে প্রথম গোল পান কামিন্স। বিশ্বকাপার ভাইয়ের গোল দেখার পরে দাদা ডিনো বলেছিলেন, ”এ তো সবে শুরু। আরও গোল অপেক্ষা করে রয়েছে।” আর তিনি জেসন কামিন্স আইএসএলের ইউটিউব চ্যানেলে ‘ইন দ্য স্ট্যান্ডস’ অনুষ্ঠানে বলেছেন, ”প্রথম গোল পাওয়ার মুহূর্তটা অবশ্যই বিশেষ। বুকের উপর থেকে পাথর যেন নেমে গেল। প্রথম গোল করার পরেই মনে হয়, আরও গোল পাব। নিজের সেরাটা বার করে আনতে সময় লাগে। একটা নতুন দেশে এসে সেখানকার স্টাইলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন। নতুন কোচ, নতুন সতীর্থ খেলোয়াড়, এখানকার আর্দ্রতা, মাঠের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগে।”
ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মুম্বই সিটি-কে উড়িয়ে দেওয়ার পরে যুবভারতীতে এক দৃশ্য দেখা গিয়েছে। গোলের পরে কামিন্স যেভাবে উদযাপন করেন, ঠিক সেই ভাবে মুখে হাত দিয়ে উদযাপন করতে দেখা যায় তাঁর সতীর্থদের। সেই সতীর্থদের সম্পর্কে কামিন্স বলছেন, ”একদল ভাল ছেলের মাঝে এসে পড়লে ওদের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটা সহজ হয়। দলে অনেক বিদেশি আছে আর দু’জন অস্ট্রেলিয়ান, দিমি আর ব্র্যান্ডন। মানিয়ে নেওয়া সহজ। হুগো ফরাসিতে কথা বলে। আমিও একটু-আধটু ফরাসি বলতে পারি। হুগোর সঙ্গে আমি ফরাসিতেই কথা বলার চেষ্টা করি। আমরা একসঙ্গে গলফও খেলি। আর রয়েছে আমার সতীর্থ স্ট্রাইকার, আরমান্দো।”
[আরও পড়ুন: লজ্জার নজির! রেড কার্ড দেখে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ‘মার্চিং অর্ডার’-এর শিকার সুনীল নারিন]
মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে হেডে গোল করেন আনোয়ার আলি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর নাম দেওয়া হয়েছে, আনোয়ার ‘এয়ার’ আলি। দলের রক্ষণভাগের খেলোয়াড় সম্পর্কে কামিন্স বলছেন, ”মাচিন্দ্রা এফসি-র বিরুদ্ধে একাই দু’টো গোল করল আনোয়ার। ওর খেলা দেখে আমি মুগ্ধ। সব সময়ে বলের সঙ্গে সঙ্গে থাকে আনোয়ার। আনোয়ারকে দেখলে আমার সের্জিও র্যামোসের কথা মনে পড়ে যায়! আমি ওকে বলেওছি, তুমি ভারতের সের্জিও র্যামোস।”
কাতার বিশ্বকাপে লিওনেল মেসির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় কামিন্সের। একসঙ্গে ছবিও তোলেন। যদিও আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে ম্যাচে নামেননি কামিন্স। বিশ্বসেরা ফুটবলার মেসি প্রসঙ্গে কামিন্স বলছেন, ”মেসিকে বলেছিলাম, তুমিই সর্বকালের সেরা। ফুটবলের জন্য যা করেছ, তার প্রশংসা করতেই হবে। ওকে আমি জড়িয়ে ধরি এবং শুভেচ্ছা জানাই বিশ্বকাপ যেন জিততে পারে। মেসি সেটাই করে দেখিয়েছে। ওর সঙ্গে দেখা হওয়াটা স্বপ্নের মতো।”
যেদিন কলকাতায় প্রথম পা রাখেন, সেদিন রাত তিনটে নাগাদ কয়েকশো সমর্থক তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে হাজির হন। যা দেখার পরে অবাক হয়ে যান কামিন্স স্বয়ং। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে কামিন্স বলছেন, ”আমার তখন জেটল্যাগ ছিল। এতটা আশা করিনি। যদিও আগেই শুনেছি এখানকার সমর্থকরা খুব আবেগপ্রবণ। যতটুকু খোঁজখবর নিয়েছিলাম, তাতে ভেবেছিলাম দু-তিনজন হয়তো আসবেন। কিন্তু ভোর তিনটে-চারটের সময়ে দেখি এক ঝাঁক মানুষ হাজির। সত্যি আমিই চমকে গিয়েছিলাম। আমাকে স্বাগত জানাতে এত মানুষ! তখনই বুঝতে পারি, এখানকার ফুটবলপ্রেমীরা কতটা আবেগপ্রবণ। সত্যি বলতে, এর আগে আমার সঙ্গে এমন কখনও হয়নি।”
সমর্থকদের উদ্দেশে কামিন্সের বার্তা, “আমরা প্রতিটা ট্রফি জিততে চাই এবং সেই জন্য নিজেদের উজাড় করে দেব। আমাদের শুধু চাই তোমাদের সমর্থন, জানি তোমরা আমাদের তা দেবে। জয় মোহনবাগান!”
[আরও পড়ুন: বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে খালি হাতে ফিরলেও অলিম্পিকে যাচ্ছেন পারুল]