সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জঙ্গিদের অতর্কিত হামলায় গত সপ্তাহে চার সেনা জওয়ানের মৃত্যু ঘিরে থমথমে উপত্যকা। তবে উত্তেজনা আরও বেড়েছে ঘটনার ঠিক পরদিন, তিন স্থানীয় বাসিন্দার নিথর দেহ উদ্ধার ঘিরে। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তাঁদের মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। সেনা-পুলিশ হেফাজতে অত্যাচারের কারণেই ওই তিন জন মারা গিয়েছেন। আহত আরও পাঁচ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ভয়ংকর অভিযোগ কতটা সত্য, তা জানতে ইতিমধ্যেই বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ভারতীয় সেনার তরফে।
জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পুঞ্চে গিয়েছেন চিফ অফ আর্মি স্টাফ (সিওএএস) জেনারেল মনোজ পাণ্ডে। নিরাপত্তা তদারকি সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠকে অংশ নেওয়ারও কথা রয়েছে তাঁর। এই বৈঠক হওয়ার কথা জম্মুর নাগরোটার হোয়াইট নাইট কর্পস-এর সদর দপ্তরে। এর পাশাপাশি উপদ্রুত এলাকাও ঘুরে দেখার কথা আছে তাঁর। সেই সময় ১৬ কর্পস এবং রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত তথ্য জেনে নেবেন তিনি, খবর তেমনই। গত সপ্তাহে পুঞ্চে সেনার দুটি গাড়িতে হামলা চালায় সশস্ত্র জঙ্গিরা। গত বৃহস্পতিবারের ওই নাশকতায় চার জন জওয়ানের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। আহত হন আরও দুজন। ঠিক তার পরদিন অর্থাৎ শুক্রবার পুঞ্চেরই বাফলিয়াজ এলাকা থেকে উদ্ধার হয় তিন স্থানীয় বাসিন্দার মৃতদেহ। এঁদের পরিচয়–সাফির হুসেন (৪৩), মহম্মদ শৌকত (২৭) এবং শাবির আহমেজ (৩২)। সকলেই তোপা পীর গ্রামের বাসিন্দা। খবর মিলেছে, রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের।
[আরও পড়ুন: পাক নির্বাচনে মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী হাফিজ সইদ! মৌলবাদীদের দখলে যাবে ইসলামাবাদ?]
মৃতদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, জওয়ানদের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তের জন্য ওই তিন জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। হেফাজতে তাঁদের উপর নির্মম অত্যাচার চালানো হয়। মৃত্যু হয়েছে সেই কারণেই। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। পরিস্থিতি যাতে অগ্নিগর্ভ না হয়ে ওঠে, আইন-শৃঙ্খলা যাতে বজায় থাকে, প্রশাসনের তরফে দ্রুত সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়, এলাকাজুড়ে মোতায়েন করা হয় পুলিশের সিনিয়র কর্তাদের। নিহতদের পরিজনদের আর্থিক অনুদান দেওয়া ছাড়াও চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় জম্মু-কাশ্মীর সরকারের তরফে।
এছাড়াও জওয়ানদের উপর হামলাকারী জঙ্গিদের খোঁজে গোটা এলাকাজুড়ে শুরু হয় সেনার আকাশপথে নজরদারি। স্থলপথেও চলে চিরুনি তল্লাশি, বিশেষ করে ডেরা কি গলি এবং বাফলিয়াজে। সেনা-পুলিশের বিরুদ্ধে এমন ভয়ংকর অভিযোগে রীতিমতো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়দের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় সেনার তরফে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হওয়ার পরই ব্রিগেডিয়ার স্তরের এক অফিসার ছুটি নিয়ে পুঞ্চ ছেড়েছেন।