স্টাফ রিপোর্টার: নিউ আলিপুরের সুরুচি সংঘের মণ্ডপে তখন সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অদ্ভুত প্রযুক্তির খেলা। যেন কোনও মহাজাগতিক রূপ। একটু আগেই সূর্যোদয়, মাঝে নির্মল আকাশ। পরক্ষণেই সূর্যাস্ত। আলো-আঁধারি। সবটাই সিস্টেমেরই অংশ। মণ্ডপের ভিতরে যখন বজ্রবিদ্যুৎ-সহ আলোর ঝলকানি। মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যায় তখন, কী আশ্চর্য, বাইরে শুরু হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি।
সুরুচির মণ্ডপে রেকর্ড ভিড়। সরতে চাইছে না সেই ভিড়। সেই ভিড় একুশ শতকের প্রযুক্তিকে সামনে রেখে কৃত্রিমভাবে তৈরি প্রকৃতির খেয়ালিপনার মাঝেই মেতে উঠল যুগলবন্দিতে। দু’জনের ঢাকের তালে। যে দু’জন নাগাড়ে ঢাক বাজিয়ে গেলেন, সেই দু’জনেরই পরিচয় রাজনৈতিক নেতা হিসাবে। একজন সুরুচি সংঘের কর্ণধার রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস (Aroop Biswas)। অন্যজন লেখক-সাংবাদিকের পাশাপাশি তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
[আরও পড়ুন: সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন পুজো পারফেক্ট ২০২২: সেরা ৫ পুজো]
তৃতীয় আর একজন যুগলবন্দির তালে সঙ্গত করে গিয়েছেন পাশে থেকেই, তিনি শিল্পী তথা রাজ্যের আর এক উল্লেখযোগ্য মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। তাঁকে দেখা যায় তাল দিচ্ছেন। মুগ্ধতার ছবি তাঁর চোখেমুখেও। হাত খুলে ঢাক বাজিয়েছেন যুগলে। পেশাদার ঢাকিদের সঙ্গে সমানে পাল্লা দিয়েই। আর তা দেখে রীতিমতো হইহই কাণ্ড।
সুরুচির মণ্ডপের (Suruchi Sangha) ভাবনা ও বৈচিত্র্য বরাবরই নজরকাড়া। কিন্তু অনুভব যেন এবারের ভাবনাকে মিলিয়ে নজিরবিহীন মাত্রা দিয়েছে। বিড়লা তারামণ্ডলের আকাশ ও মহাবিশ্বের বিভিন্ন বর্ণনা যেন সামনে এসেছে। প্রযুক্তির এমন বাস্তবায়ন দেখা যায়নি আগে কোথাও। কবিগুরুর ‘আকাশ ভরা সূর্য তারা’ভাবনার যেন প্রকৃত রূপ। কুণালও বললেন, ‘‘এমন মণ্ডপ দেখিনি কখনও। আশ্চর্য হয়েছি।’’
তাঁর মতো আশ্চর্য হয়েছেন অগুনতি মানুষ। যে ভিড়ে মানুষের সংখ্যা কোনও মিটারে ধরা যায় না। বস্তুত, উদ্বোধনের পর থেকেই ভিড়ের প্রেক্ষিতে প্রতিদিনই রেকর্ড ভেঙেছে নিউ আলিপুরের সুরুচির মণ্ডপ। মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যায় সব ভিড় যেন আছড়ে পড়েছিল সুরুচিতেই। আর ঢাকের কাঠি হাতে দুই নেতাকে দেখে বেজায় খুশি দর্শনার্থীরা। বৃষ্টির পরও রয়ে গিয়েছিল সেই রেশ। প্রত্যেকের মধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রে ছিল প্রযুক্তির চোখধাঁধানো সেই মণ্ডপ আর ঢাকে যুগলবন্দি।
দেখুন ভিডিও।