সুলয়া সিংহ: এদেশে ক্রিকেট ধর্ম। আর ফুটবল প্রাণ। এই দুই খেলার জনপ্রিয়তার ধারেকাছে ঘেঁষতে পারে না অন্য খেলাগুলো। তবে ধীরে ধীরে বদল ঘটছে। সোনার ছেলে নীরজ চোপড়ার জন্য রাত জাগছে দেশবাসী। কুস্তিগির ভিনেশ ফোগাট, সাক্ষী মালিকদের প্রতিবাদে গর্জে উঠছে আমজনতাও! আগামী পাঁচ বছরে অ্যাথলেটিক্স, ব্যাডমিন্ডন থেকে টেবিল টেনিসের দুনিয়ায় বড়সড় বদল ঘটবেই। বিশ্বাস বাংলার টেবিল টেনিস তারকা পৌলমী ঘটকের।
মঙ্গলবার টালিগঞ্জের পল্লিশ্রী নবারুণ ক্লাবে শুভ উদ্বোধন হল বাংলার টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপের। যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। চ্যাম্পিয়ন বঙ্গতনয়া পৌলমীর সঙ্গে টেবিল টেনিসও খেলেন তিনি। জমে ওঠে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। নবারুণ ক্লাবের সচিব অরূপ চৌধুরী জানালেন, আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হল টুর্নামেন্ট। চলবে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বিভিন্ন জেলা থেকে খেলোয়াড়রা অংশ নিয়েছে এই চ্যাম্পিয়নশিপে। ব্যাপক সাড়া মিলেছে। সেই অনুষ্ঠানেই পৌলমী ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ডিজিটালকে জানান, যত দিন যাচ্ছে, দেশে জনপ্রিয়তা বাড়ছে টেনিস, ব্যাডমিন্টন, অ্যাথলেটিক্সের মতো খেলারও। আগামী দিনে এই সব খেলাই ক্রিকেট-ফুটবলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে।
[আরও পড়ুন: জেলা কমিটিতে অবাঙালিদের দাপট! খোদ শাহের কাছে নালিশ বিজেপি কর্মীদের একাংশের]
পৌলমীর কথায়, “অন্য খেলার থেকে ক্রিকেট আর ফুটবল অনেক বেশি চর্চিত। এই খেলাগুলোকে সুন্দরভাবে মানুষের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। আর এই কাজটা একদিনে হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে হতে হতে এখানে পৌঁছে গিয়েছে। অন্য খেলাগুলোর শেখা উচিত যে কীভাবে খেলাটাকে বিক্রি করা যায়।” এরপরই তিনি যোগ করেন, “আগে টেবিল টেনিস নিয়ে ক’টা কথা হত? এখন আলটিমেট টেবিল টেনিস লিগ চালু হওয়ায় ধীরে ধীরে নবপ্রজন্ম আগ্রহ দেখাচ্ছে। আর এই বাংলার প্রচুর প্রতিভা রয়েছে। অর্থের অভাব আর কর্তৃপক্ষের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বতে খেলাটা পিছিয়ে পড়েছে। তবে সারাক্ষণ নেগেটিভ না ভেবে, চেষ্টাটা চালিয়ে যাওয়া উচিত। রাতারাতি তো কোনও খেলাই জনপ্রিয়তা পায় না। এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রথম ইটটা পোঁতা হয়েছে। এবার এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”
পৌলমীর বিশ্বাস, “মানুষের মাথায় ক্রিকেট-ফুটবলকে সুন্দর ভাবে গেঁথে গিয়েছে। তবে আগামী পাঁচ বছরে অন্য খেলাতেও ইতিবাচক বদল ঘটবে। অ্যাথলেটিক্সে যেখানে মাদার অফ অল স্পোর্টস বলা হয়, সেখানে আগে অলিম্পিক কোয়ালিফাই করলেই হইহই হত। আর এখন তো আমরা সোনা পাচ্ছি। টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন নিয়ে আগে এত চর্চাই ছিল না, এখন তো হচ্ছে। তাছাড়া এখনকার প্রজন্ম শুধুই ক্রিকেট-ফুটবলকে বেছে নিচ্ছে না, অন্যান্য খেলাতেও আগ্রহ দেখাচ্ছে। এগুলোই বুঝিয়ে দিচ্ছে, খুব তাড়াতাড়ি খেলার মানচিত্র বদলে যাবে।”