বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি : মুম্বইয়ের (Mumbai) বৈঠকের ২৪ ঘণ্টা আগে আপ (AAP) মুখপাত্রর মন্তব্যে বুধবার সকালে অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি হয়েছিল ‘ইন্ডিয়া’ জোটে। পরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) সঙ্গে আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal) দীর্ঘ বৈঠকের পর সেই অস্বস্তির মেঘ কেটেছে বলে রাজধানীর রাজনৈতিক মহলের খবর। আপ মুখপাত্র জোটের প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী হিসেবে কেজরির নাম ভাসানোতেই অস্বস্তির সূত্রপাত। বিকেলে আপ-এর মন্ত্রী আতিশি জানিয়ে দেন, মুখপাত্র তাঁর ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করেছিলেন। ‘ইন্ডিয়া’ জোটে কেজরিকে ঘিরে যাতে কোনও জট না তৈরি হয় সে ব্যাপারে গোড়া থেকেই সচেষ্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এবার জট কাটাতে অভিষেকও সক্রিয় বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
দিল্লিতে বৈঠক সেরে এদিন রাতেই সোজা মুম্বই চলে যান অভিষেক। কেজরির সঙ্গে তাঁর বৈঠকে দিল্লির (Delhi) রামলীলা ময়দানে তৃণমূলকে (TMC) ধরনার অনুমতি না দেওয়ার বিষয়টিও এসেছে বলে সূত্রের খবর। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নিয়ন্ত্রিত দিল্লি পুলিশ তৃণমূলকে অনুমতি দিতে চাইছে না।
‘ইন্ডিয়া’ জোটে থাকলেও কেজরির দল আম আদমি পার্টি’র সঙ্গে নানা বিষয় নিয়েই কংগ্রেসের সংঘাত অব্যাহত। সেই সংঘাতের প্রভাব যাতে কোনওভাবেই ‘ইন্ডিয়া’ জোটে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে প্রথম থেকেই সক্রিয় রয়েছেন মমতা। এদিন সকালে আপ-এর মুখপাত্র প্রিয়াঙ্কা কক্করের এক বক্তব্য ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়। তিনি বলেন, আপ সুপ্রিমো তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকেই তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান এবং ‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে কেজরিওয়ালের নামই উঠে আসুক। এই বক্তব্য সামনে আসতেই ‘ইন্ডিয়া’ জোটের মধ্যে অস্বস্তির মেঘ দানা বাঁধে। মুম্বইয়ে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জানাতে হয় যে, জোট কাউকে মুখ হিসেবে তুলে ধরছে না। বিকেলে অবশ্য আপ-এর মন্ত্রী আতিশি জানিয়ে দেন যে প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে নেই কেজরিওয়াল। প্রিয়াঙ্কা কক্কর যা বলেছেন সেটি তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। আপ ইন্ডিয়া জোটে অংশগ্রহণ করেছে সংবিধান এবং গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য।
অভিষেকের সঙ্গে কেজরির বৈঠকের পর আপ-এর অবস্থানে বদল ঘটেছে বলেই রাজনৈতিক মহলের বড় অংশের ধারণা। প্রিয়াঙ্কা কক্কর তাঁর ব্যক্তিগত মতামত বলে যেটা বলেছিলেন, সেটা যে আপ-এর তরফে হিসেব কষেই বলা হয়েছিল, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের সংশয় নেই। তৃণমূলসহ অন্যান্য জোট সদস্যের চাপেই আপ পিছু হঠে যায় বলে রাজধানীর রাজনৈতিক মহলের দাবি। এক্ষেত্রে কেজরি ও অভিষেকের বৈঠককে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।